শাহবাগে জড়ো হওয়া ব্যক্তিরা জানান, জুলাই গণআন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক ছিলেন ওসমান হাদি। তার হত্যার প্রতিবাদে জানাজার পর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবেন।
এদিকে জানাজাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবন ও এর আশপাশে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে ডিএমপি। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় জানাজার পুরো এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্টে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, কোনও অংশগ্রহণকারী ব্যাগ বা ভারী বস্তু নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া পুরো এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ওসমান হাদির নামাজে জানাজা উপলক্ষে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বিপুল জনসমাগম ও শৃঙ্খলার স্বার্থে শনিবার সকাল ১০টা থেকে খেজুরবাগান ক্রসিং থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ ওই এলাকায় সাধারণ যানবাহনকে বিকল্প পথ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে হাদির মৃত্যু ঘিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে আজ সকাল থেকে ছিল অস্বাভাবিক নীরবতা। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়গুলোতে যানবাহনের চলাচল কম দেখা গেছে, অনেক এলাকায় দোকানপাটও খোলেনি। নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
উল্লেখ্য, হাদির মৃত্যুতে আজ সারা দেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে এবং সরকারি-বেসরকারি সব ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হন শরীফ ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুর থেকে হাদির লাশ আসার পর শুক্রবার রাতেই মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে।