ঢাকা | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি সৌদির

প্রকাশের তারিখ: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি : পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব। এই চুক্তি দুই দেশের কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে। উভয় দেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ চুক্তির তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল জাজিরা।

সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) প্রতিবেদন মতে, গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই চুক্তি বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘এই চুক্তিটি উভয় দেশের নিরাপত্তা জোরদার এবং অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য তাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এর লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
 
চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কোনো একটি দেশের ওপর যে কোনো আগ্রাসনকে উভয় দেশের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।’ আরও বলা হয়েছে, এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব’ এবং ‘অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।
 
বুধবার রিয়াদে সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।’ এসপিএ জানিয়েছে। তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু, অভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন।
 
চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এক ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এই চুক্তিটি বহু বছরের আলোচনার ফল। এটি নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া।’ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, যা সব সামরিক কৌশলকে অন্তর্ভুক্ত করে।
 
দোহায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা এবং এরপর আরব-ইসলামি দেশগুলোর জরুরি সম্মেলনে হামলার নিন্দা জানানোর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান-সৌদি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। এ কারণে চুক্তিটিকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
 
হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যার লক্ষ্যে গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহার একটি আবাসিক এলাকায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন। হামলায় হামাসের নেতারা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও অন্তত ছয়জন নিহত হন। কাতারের আমির ইসরাইলি হামলাকে ‘নির্লজ্জ, বিশ্বাসঘাতক ও কাপুরুষোচিত’ বলে অভিহিত করেন।
 
এ ঘটনায় আরব ও মুসলিম দেশগুলোসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে নিন্দার ঝড় ওঠে। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় আরব ও মুসলিম দেশগুলোর একটি জরুরি সম্মেলন ডাকে কাতার যা গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হয়। আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ সম্মেলনে প্রায় ৬০টি সদস্যদেশ অংশ নেয়।
 
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো কাতারের প্রতি সংহতি এবং দোহায় ইসরায়েলি বোমা হামলার নিন্দা জানায়। আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতারা বলেন, ইসরাইলের নজিরবিহীন আগ্রাসনের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ বার্তা দেয়ার জন্য এ বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) ‘একটি যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার’ প্রতিশ্রুতি দেয়, যাকে ওই বৈঠকের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ফল বলে মনে করা হচ্ছে।
কমেন্ট বক্স