বাংলার প্রতিচ্ছবি : ইসরাইলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের জিম্মি ও মিসিং ইন অ্যাকশন ইউনিটের প্রাক্তন প্রধান রামি ইগ্রা বলেছেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সময় ফুরিয়ে আসছে। তিনি দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হবেন। বুধবার রেডিও ১০৩ এফএম-এ ইগ্রা এমন মন্তব্য করেন।
হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের জন্য ইসরাইলি প্রস্তাবকে ‘প্রতিরোধ আন্দোলনের কাছে উপস্থাপিত সবচেয়ে কঠিন প্রস্তাব’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
প্রাক্তন সিনিয়র মোসাদ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারব যে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। কেন ইসরাইল রাষ্ট্র এই প্রস্তাবটি পেশ করেছে, যা স্পষ্টতই কেউ গ্রহণ করবে না। তারা এতে নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। যদিও এটা স্পষ্ট যে হামাস শুরু থেকেই তার টিকে থাকার জন্য কাজ করে আসছে এবং তারা এতে রাজি হবে না।’
যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে ইসরাইলের প্রস্তাব নিয়ে মোসাদ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নেতানিয়াহু জানে যে সময় ফুরিয়ে আসছে। এটা বন্দি সৈন্যদের জন্য নয়, বরং তার জন্য। নেতানিয়াহুকে যে সংবাদ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, ট্রাম্প স্পষ্টভাবে সেখানে বলেছিলেন যে যুদ্ধ শেষ হতে হবে এবং এটি দ্রুত শেষ হবে।’
ইগ্রা আরও উল্লেখ করেছেন যে, এটা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ যে ট্রাম্প শীঘ্রই সৌদি আরব সফর করবেন। যারা কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করছে এবং ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমাধান দাবি করছে।
ইগ্রা আরও বলেন, ‘এই সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে, নেতানিয়াহুর কাছে এটা স্পষ্ট যে তারা যেমন তাকে প্রথম পর্যায় (যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির) বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করেছিল, তেমনি তারা তাকে দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করবে। যার মধ্যে মিশরীয় সমাধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে গাজায় একটি প্রশাসনিক কমিটির শাসন থাকবে।’
তিনি যুদ্ধে ইসরাইলের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধে হেরে গেছি, এবং আমাদের আর কোনও বিকল্প নেই।’
সাবেক এই মোসাক প্রধান আরও বলেন, ‘বিষয়টি দ্রুত ইরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে নেতানিয়াহু ‘লিবিয়ার মতো ভেঙে ফেলার’ বাক্যাংশ ছড়াচ্ছেন, যেখানে আমেরিকানরা তার কথা শুনছে না। আমাদের বুঝতে হবে যে নেতানিয়াহু আমাদের এখানে হামাসের শাসনের বিকল্প ছাড়াই নিয়ে এসেছেন। তিনি তার রাজনৈতিক অংশীদারদের কারণে ও পরিস্থিতি সমাধানের ভয়ে দেড় বছর নষ্ট করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, আমেরিকানরাই দিনশেষে সিদ্ধান্ত নেয়। ট্রাম্প এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে শত শত কাজে ব্যস্ত। তিনি শেষ পর্যন্ত নোবেল শান্তি পুরষ্কার জিততে এবং সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অর্জন করতে চান। অন্যদিকে নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকতে চান। যা তার জন্য কঠিন হবে। তাকে দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজি হতে হবে। তিনি কীভাবে হাঙ্গেরি ছেড়েছিলেন এবং কীভাবে তিনি ট্রাম্পের হাতে মার খেয়ে শিশুটির মতো সেখানে চলে গিয়েছিলেন তা ভেবে দেখুন।’