বাংলার প্রতিচ্ছবি : প্রতিষ্ঠার ৩৭ বছর পর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করেছে কুমিল্লার ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই মিলনমেলাকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড়’ পুনর্মিলনী বলে দাবি করেছে আয়োজক কমিটি। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।
সরেজমিনে পরিদর্শন ও আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ৩৭ বছরে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিদায় নিয়েছেন। যার মধ্যে ১০ জানুয়ারির এই পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণ করেছেন ছয় হাজারের অধিক সাবেক শিক্ষার্থী। সকাল ১০টায় কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত কার্ড প্রদর্শন করে লম্বা লাইনে ভেতরে ঢুকছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। সংরক্ষিত আসন থাকায় কার্ডবিহীন কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। উপস্থিত অনেকের গায়ে আছে নিজেদের বর্ষভিত্তিক টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি। অনেকের মাথায় ক্যাপ।
এদিন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শতাধিক সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন নামজাদা কোম্পানির মালিক, সচিবালয় ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ। যারা সবাই ইবনে তাইমিয়ার সাবেক শিক্ষার্থী। বিদেশে অবস্থানকারী অনেক সাবেক শিক্ষার্থী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় কুমিল্লা স্টেডিয়ামে এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন শুরু হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মু. শফিকুল আলম হেলাল।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এ গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছে। স্কুল ও কলেজপর্যায়ে সারা বিশ্বে এত বড় রিইউনিয়ন আগে হয়নি। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তারা দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে থেকে মানবতার সেবা করে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা যেখানেই যায় তারা ফার্স্ট হয়। ইতোমধ্যে তারা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তারাই একমাত্র যোগ্য। অ্যাকাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষাতেও তারা অনেক এগিয়ে।’ আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রিইউনিয়নের প্রধান উদ্যোক্তা ও অ্যাডমিন ড. আলমগীর হোসেন রিপন। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ছাত্র এবং শিক্ষকরা তাদের স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। দিনব্যাপী গ্র্যান্ড রি-ইউনিয়নে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, র্যাফেল ড্র ও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিইউনিয়নের রেকর্ডটি রয়েছে ভারতের ভাস্যম এডুকেশনাল ইনস্টিটিউটের (গুন্টুর, অন্ধ্রপ্রদেশ) নামে। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর, এই রিইউনিয়নে চার হাজার ২৬৮ জন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। এটি ‘গোল্ডেন বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিশ্বের বৃহত্তম রিইউনিয়নের রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতের এ রেকর্ডকে পেছনে ফেলে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।