বাংলার প্রতিচ্ছবি : ঋণের এক হাজার ১১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমসহ (৩৮) ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে মামলাটি করেন দুদক ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান। মামলায় আসামি করা ৩০ জন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
দ্য পেনাল কোড এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭ক/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আহসানুল আলম চট্টগ্রাম ভিত্তিক শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিক সাইফুল আলমের ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুচ্ছাদাত এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার ৫৪ আসামিরা হলেন- ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী (৪৯), ব্যাংকের ৩০ সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা হলেন- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম (৩৮), সাবেক পরিচালক ও চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন (৫৮), সাবেক নমিনি পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ (৬৭), পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ডা. তানভীর আহমদ (৩৮), পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কামরুল হাসান (৭৫), ইসি কমিটির সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক ও সদস্য ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর (৬৮), সাবেক পরিচালক ও সদস্য ড. ফসিউল আলম (৭২), ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা (৬১), ইসি কমিটির সাবেক পরিচালক ও সদস্য জামাল মোস্তফা চৌধুরী (৬৬), ইসি কমিটির সদস্য আবু সাইদ মোহাম্মদ কাশেম (৩৯), সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সদস্য জে. কিউ. এম হাবিবুল্লাহ (৫৪), সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আহ্বায়ক মুহাম্মদ কায়সার আলী (৫৭), ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ কমিটি-১ এর সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলী (৬৭), সাবেক সিএইচআরও (ডিএমডি) ও সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী (৬২), এএমডি ও সদস্য আইসি-১ এর আলতাফ হোসেন (৬১), সাবেক ডিএমডি মোহাম্মদ সাব্বির (৫২), এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের (৫২), সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন (৪৫), এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ (৬২), সাবেক ডিএমডি ও সদস্য আবুল ফাইয়াজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন (৫৭), সাবেক এসইভিপি রফিকুল ইসলাম (৫৮), এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফরিদ উদ্দিন (৬০), সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চুক্তি ভিত্তিক) ও সদস্য কাজী রেজাউল করিম (৫৮), এসভিপি ও সাবেক জুবিলী রোড শাখা প্রধান সোহেল আমান (৬৬), সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা প্রধান শাহাদাৎ হোসেন (৫৭), এভিপি, সাবেক ম্যানেজার অপারেশন্স (ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফলিও) মাইন উদ্দিন (৪৫), এফএভিপি (বিনিয়োগ ইনচার্জ) মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম (৪৩), সাবেক এসইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান (বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত) মো: নাইয়ার আজম (৬০), সাবেক ইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান মুহাম্মদ নূরুল হোসাইন কাওসার (৫৩), এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী (৪৭)।
ইসলামী ব্যাংকের বাইরে এ মামলায় আসামি করা হয়- বাণিজ্য বিতান করপোরেশনের প্রোপ্রাইটর তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী (৩৫), অ্যাপার্চার ট্রেডিং হাউজের প্রোপ্রাইটর এস. এম নেছার উল্লাহ (৩৯), ড্রিমস্কেপ বিজনেস সেন্টারের প্রোপ্রাইটর মোহাম্মদ মহসিন মিয়াজী (৩৯), এক্সিসটেন্স ট্রেড এজেন্সির প্রোপ্রাইটর সালাহ উদ্দিন সাকিব (৩৬), ফেন্সিফেয়ার করপোরেশনের প্রোপ্রাইটর মোহাং আব্দুল মজিদ খোকন (৫৬), এপিক এ্যাবল ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর ইকবাল হোসেন (৩৮), ফেমাস ট্রেডিং করপোরেশনের প্রোপ্রাইটর আরশাদুর রহমান চৌধুরী (৫৬), জিনিয়াস ট্রেডিংয়ের প্রোপ্রাইটর মোহাম্মদ আবুল কালাম (৬২), গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লি. এর এমডি রাশেদুল আলম (৬৩), গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লি. এর পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর (৪২), ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের হিসাব পরিচালনাকারী আশরাফুল আলম (২৭), ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারজানা বেগম (৪৪), ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াহিদ (৪৩), ইনিফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের হিসাব পরিচালনাকারী মনতোষ চন্দ্র রায় (৪৩), চেমন ইস্পাত লি. এর ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম (৪৪), চেমন ইস্পাত লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (৪৬), আনছার এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর আনছারুল আলম চৌধুরী (৫৯), রেইনবো করপোরেশনের প্রোপ্রাইটর রায়হান মাহমুদ চৌধুরী (৪২), গ্রিন এক্সপোজ ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর এম এ মোনায়েম (৫৭), সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের প্রোপ্রাইটর মাহাফুজুল ইসলাম (৫৫), মেসার্স শাহ আমানত ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী চৌধুরী (৪২), সোনালী ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর সহিদুল আলম (৬৮) ও মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার চৌধুরী (৪৩)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হওয়ার আশায় এবং অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতি করে রেকর্ডপত্র সৃজনপূর্বক তা ব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ এবং অপরাধজনক অসদাচরণের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, জুবলী রোড শাখা, চট্টগ্রাম থেকে ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির নামে বিদ্যমান মুরাবাহা টিআর বিনিয়োগের মূল দায় ৯৯৩ কোটি ৭০ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৮ টাকা। এ টাকার মুনাফাসহ এক হাজার ১১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬৩ লাখ ৭৭৯ টাকা। এ টাকা আত্মসাৎ করে এবং আত্মসাৎ করা অর্থের প্রকৃত উৎস ও প্রকৃতি গোপন করার জন্য স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধ করেছে আসামিরা।