বাংলার প্রতিচ্ছবি : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী সংঘর্ষ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে হওয়া বিক্ষোভের পর দেশটিতে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন ।
শনিবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়াহ।
উত্তর আফ্রিকার সংঘাতপীড়িত এই দেশে ত্রিপলিভিত্তিক সরকারের সঙ্গে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীর লড়াইয়ে অন্তত আটজন নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি, তবে এই সংঘর্ষ গত সপ্তাহেই থেমে যায়। লিবিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
শনিবার আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়।
এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বার্তায় পরিষদ জানায়, লিবিয়ার জনগণের অংশগ্রহণে একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্মিলনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত এবং এতে বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপ থাকা উচিত নয়।
লিবিয়া বর্তমানে দুটি ভাগে বিভক্ত – একটি জাতিসংঘ স্বীকৃত ত্রিপলিভিত্তিক সরকার, যার নেতৃত্বে আছেন প্রধানমন্ত্রী আব্দুলহামিদ দবেইবা; অপরটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসন।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষ শুরু হয় তখন, যখন দবেইবার সরকার-ঘনিষ্ঠ ৪৪৪ ব্রিগেড একটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর এক নেতাকে হত্যা করে। এর পর ৪৪৪ ব্রিগেডের সঙ্গে রাদা নামক আরেকটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর লড়াই শুরু হয়। রাদা বাহিনী ত্রিপলির কিছু পূর্বাঞ্চল এবং বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী দবেইবা কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী বিলুপ্ত করার নির্দেশ দেন, তবে এই তালিকা থেকে ৪৪৪ ব্রিগেডকে বাদ রাখা হয়, যা বিরোধ ও সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়।
ত্রিপলিতে সরকারবিরোধী জনরোষও বেড়েছে। বিক্ষোভকারীরা দবেইবার পদত্যাগ দাবি করছে।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক অস্থিরতা, মিলিশিয়াদের আধিপত্য এবং সহিংসতায় জর্জরিত।
আফ্রিকান ইউনিয়ন বলেছে, লিবিয়ার এই সংকটের সমাধানে শুধুমাত্র লিবিয়ার নাগরিকদের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ সংলাপই পারে টেকসই সমাধান এনে দিতে।