ঢাকা | ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

শরীয়তপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের তারিখ: এপ্রিল ৬, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
বাংলার প্রতিচ্ছবি : শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর, হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

রোববার বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান।

জানা যায়, জাজিরা উপজেলার আওয়ামী লীগের দুই সদস্য বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে দুর্বাডাঙ্গা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাড়িঘর ভাঙচুরসহ ৫ শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। 

একপর্যায়ে মুলাই বেপারী কান্দি, সলিমুল্লাহ মাদবর কান্দি ও আহসান উল্লাহ মুন্সি কান্দি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ককটেলের শব্দে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও যৌথবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় রোববার জাজিরা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক সঞ্চয় কুমার বাদী হয়ে ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮০০ থেকে ১ হাজার আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার রাতে ঢাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারীকে গ্রেফতার করেছে। জাজিরা বিলাসপুর এলাকা থেকে সাদ্দাম হোসেন (৩৫), শাহ আলম (৪২), শাহজাহান (৪৪), মতিউর রহমান (৪৭), শেখ আ. মালেক (৫৫), সাহাবুদ্দিন শেখকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। 

এছাড়াও অভিযানের সময় জাজিরা থানার পুলিশ বোমা তৈরির কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করলেও কোনো বোমা উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশ বলছে, এলাকা শান্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেফতারের ভয়ে এলাকা পুরুষশূন্য রয়েছে। বোরবার দুপুরে গ্রেফতারদের রিমান্ডের আবেদন করে শরীয়তপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।  

এদিকে সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার অভিযোগে জলিল মাদবরের সমর্থকরা মুলাই বেপারী কান্দি, সলিমুল্লাহ মাদবর কান্দি ও আহসান উল্লাহ মুন্সি কান্দি এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে শতাধিক বোমা ফাটিয়ে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

আহসান উল্লাহ মুন্সি কান্দি এলাকার ফেরদৌসি আকতার বলেন, ঘটনার পর আমরা সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার কারণে জলিল মাদবরের সমর্থকরা বাড়িতে এসে শতাধিক বোমা ফাটিয়ে হুমকি দিয়ে গেছে। পুলিশ এলে জলিল সমর্থকরা গা-ঢাকা দেয়। পুলিশ চলে গেলে আবার এসে হুমকি দেয়। এটা পুলিশকে জানিয়েছি। 

এ বিষয়ে জলিল মাদবরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং সমর্থকদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।

বোমা হামলার পর হুমকির কথা অস্বীকার করে জাজিরা থানার ওসি মো. দুলাল আকন্দ বলেন, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। রোববার দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। রিমান্ড চাওয়া হবে। গতকাল ও আজ অভিযান চালিয়েছি। এলাকায় কোনো পুরুষ নাই।

এ ব্যাপারে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান বলেন, দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক সঞ্জয় কুমার বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
কমেন্ট বক্স