মেহেদী হাসান মারুফ (সাতক্ষীরা প্রতিনিধি): সাতক্ষীরার ঈদ বাজার জমজমাট বিপনী বিতান গুলো সেজেছে রং বেরং এ সব স্রোত মিশেছে ঈদ কেনাকাটায়, চলছে গভীর রাত পর্যন্ত।
রমজানের শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে সাতক্ষীরা ঈদবাজার, অভিজাত শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে । প্রিয়জনকে উপহার দিতে ধনী ও মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি কেনাকাটায় পিছিয়ে নেই নিম্নবিত্তের মানুষও।
সরেজমিনে গতকাল বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত দেখা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেট, আল-বারাকা শপিং সেন্টার, সাতক্ষীরা শপিং সেন্টার, বসুন্ধরা টাওয়ার, মেহেরুন প্লাজা, আমিনিয়া মার্কেট, সুলতানপুর বড় বাজার ও থানা সড়কের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদে নতুন পোশাক কিনতে আধুনিক ফ্যাশন হাউসগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ভিড় করছেন ক্রেতারা। মেয়েদের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানি থ্রি-পিস। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ঈদ পোশাকে দেড় থেকে প্রায় দুই গুণ দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন ব্যবসায়ী বলেন, ঈদ উপলক্ষে সাতক্ষীরার বিভিন্ন মার্কেট ভারতীয় পোশাকে ছেয়ে গেছে। স্থানীয় মার্কেটগুলোতে মানসম্মত দেশীয় পোশাকসামগ্রী থাকলেও ক্রেতাদের চাহিদা ভারতীয় ও পাকিস্তানি পোশাকে।
এ বছর ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে প্রতি বছরের মতোই পাঞ্জাবি। তবে নারীদের শাড়ির কদর কমে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানি থ্রি-পিস। ক্রেতারা দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক, জুতা, গহনা থেকে শুরু করে হরেক পণ্যের দোকানে ভিড় করছেন। ১৫ রমজানের পর থেকে ক্রেতাদের পদচারণা বাড়েছে এবং আশানুরূপ বিক্রি দিনদিন বাড়ছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
কয়েক জন ব্যবসায়ী বলে, এবার ঈদে আকর্ষণীয় পোশাকের মধ্যে রয়েছে বাজিরাও মাস্তািন, শারারা, লেন্ত, লাসা, লং স্কার্ট, শর্ট স্কার্টসহ বিভিন্ন নামের থ্রি-পিস ও ফোর-পিস পোশাক। তবে দেশি পোশাক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেছে। আকৃষ্ট করেছে দেশীয় পণ্য টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি, খদ্দর, মণিপুরি, রাজগুরু, বালুচরি, জর্জেট শাড়ি। তাঁরা বলেন, ভারতীয় কটকটি থ্রি-পিস দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা, কিরণমালা আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, মধুমালা দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা, মায়াপরী সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা, ফ্লোর টাচ সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা, লং কটি ফোর পিস আট হাজার থেকে বারো হাজার টাকা। তাঁরা বলছেন, ভারতীয় পোশাকের দাম বেশি। সে তুলনায় দেশীয় পোশাকের দাম কম ও মান ভালো। নতুন নতুন দোকানে ইতিমধ্যে তরুণ-তরুণীরা ভিড় করছেন। পালকি শাড়ি হাউস, বিসমিল্লাহ ক্লথ স্টোর, মীম গার্মেন্টস, বেবী ফ্যাশন, রংধনু বস্ত্র বিপণি, সাত রং বস্ত্র বিপণি, ভ্যারাইটি স্টোর অ্যান্ড সন্স, নবরূপা ফ্যাশন, ফ্যাশন এশিয়া, লেডিস কর্নারসহ অন্যান্য ছিট কাপড় ও তৈরি পোশাকের দোকানে সকাল ১০টার পরপরই থাকছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, নিম্নবিত্তদের কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যে থানা মসজিদের সামনে ফুটপাতে বেশ কয়েকটি পোশাকের দোকান দিয়েছে। এসব মার্কেটেও জমে উঠেছে বেচাকেনা। থানা মসজিদের সামনে, প্রতিটি পোশাকই দর্শক-ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বিক্রি ভালো হওয়ায় সন্তুষ্ট। দেভাটা বয়রা থেকে আসা মাসকুরা বলেন, কাপড়ের বাজারে এতো ভিড়ে মালামাল দেখতে খুব কষ্ট হচ্ছে, দোকান দার ভাইরা ক্লান্ত হয়ে গেছে, তার পরেও বাড়ির সবার জন্য একটু কেনাকাটা করতে হবে।
শ্যামনগর থেকে আসা নাহার বলেন, পছন্দমতো ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি অনেক।