Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeপ্রধান সংবাদসড়ক দুর্ঘটনায় তছনছ শাহরুখের এই নায়িকার জীবন, ভুগেছেন ক্যানসারেও

সড়ক দুর্ঘটনায় তছনছ শাহরুখের এই নায়িকার জীবন, ভুগেছেন ক্যানসারেও

একটা সিনেমা রাতারাতি তারকা বানিয়েছিল মহিমা চৌধুরীকে। বড় সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। অভিষেক ছবিতে এক পাশে ছিলেন সুভাষ ঘাইয়ের মতো নামকরা পরিচালক, আরেক পাশে ছিলেন শাহরুখ খানের মতো সুপারস্টার। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরদেশ’ ছবির মাধ্যমে বিটাউনে পা রাখেন মহিমা। তবে কয়েক বছর পর গ্ল্যামারের জগৎ থেকে হারিয়ে যান তিনি। গতকাল ছিল এই তারকার জন্মদিন। ১৯৭৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
অনেকের মতে, সুভাষ ঘাইয়ের অন্যতম সেরা আবিষ্কার ছিলেন এই বলিউড অভিনেত্রী। তবে হঠাৎই বিটাউন থেকে হারিয়ে যান মহিমা। লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। কী কারণ এই নির্বাসনে যাওয়ার? জানালেন নিজেই। এক সাক্ষাৎকারে মহিমা বলেন, ‘১৯৯৯ সালের আশপাশে প্রকাশ ঝা পরিচালিত “দিল ক্যায়া কারে” ছবির শুটিং করছিলাম। ছবিটির প্রযোজক ছিলেন অজয় দেবগন ও কাজল। স্টুডিওতে যাওয়ার পথে বেঙ্গালুরুতে হঠাৎই একটা ট্রাক আমার গাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে। এত জোরে ধাক্কা লেগেছিল যে গাড়ির কাচ আমার মুখ ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।’

স্মৃতি হাতড়ে ওই দুর্ঘটনার কথা মনে করে তিনি আরও বলেন, ‘ওই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছিল যে আমি মারা যাচ্ছি। আশপাশের মানুষ এত ভয় পেয়েছিল যে সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। অবশেষে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার মা আর অজয় হাসপাতালে ছুটে এসেছিল। আমি আয়নায় নিজের চেহারা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার বেশ কয়েকটা সার্জারি হয়। ডাক্তার আমার মুখ থেকে ৬৭টা কাচের টুকরা বের করেন।’

মাহিমা চৌধুরী

মাহিমা চৌধুরীইনস্টাগ্রাম

মহিমা আরও বলেন, ‘সার্জারির পর ঠিক হয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। আমি সব সময় ঘরের ভেতরেই থাকতাম। আর তখন বাইরের সূর্যের আলো আমার সহ্য হতো না। ডাক্তার আমাকে বাড়ির বাইরে যেতেও নিষেধ করেছিলেন। তখন আমি নিজেই নিজের মুখ আয়নায় দেখে ঘৃণা করতাম, ভয় করত। আমি এই দুর্ঘটনার কথা ইন্ডাস্ট্রির মানুষকে বলিনি। কারণ, আমার মনে হয়েছিল, ইন্ডাস্ট্রি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। আমি হয়তো জীবনে আর কাজ পাব না। তাই আমি চলচ্চিত্রের জগৎ থেকে নিজেকে সাময়িকভাবে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলাম। নিজেকে অন্তরালে রেখেছিলাম। আমার পরিবার তখন আমার পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাকে শক্তি দিয়েছিল।’

এখানেই মহিমার যুদ্ধ শেষ হয়নি। অনেক দিন খবরে না থাকা অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরী জানান মন খারাপ করা খবর, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। গত বছর অভিনেত্রীর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর অবশ্য জানিয়েছেন অভিনেতা অনুপম খের।

‘পরদেশ’–এ মাহিমা

‘পরদেশ’–এ মাহিমাপ্রযোজনা সংস্থার পেজ থেকে

বছরখানেক আগে নিজের ইনস্টাগ্রামে অভিনেত্রীর একটি ভিডিও শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘মাসখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে ফোন করেছিলাম ওকে। আমার ৫২৫তম ছবি “দ্য সিগনেচার”-এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় নিয়ে কথা বলি। আলাপ চলতে চলতে জানলাম, ও ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছে। তার সাহস বিশ্বজুড়ে নারীদের জন্য প্রেরণা হতে পারে। সে চেয়েছিল, তার রোগের কথা আমিই প্রকাশ করি।’
মহিমার সাহসিকতার প্রশংসা করে অনুপম আরও বলেন, ‘তুমি আমার হিরো। বন্ধুরা, তার জন্য ভালোবাসা, প্রার্থনা আর আশীর্বাদ পাঠান। সে শুটিং সেটে ফিরবে, যেখানে তাকে মানায়, সে ওড়ার জন্য প্রস্তুত। সব পরিচালক, প্রযোজক যাঁরা আছেন, তাঁদের বলতে চাই, তাঁর প্রতিভা কাজে লাগানোর এই সুযোগ।’

‘পরদেশ’–এ শাহরুখের সঙ্গে মাহিমা

‘পরদেশ’–এ শাহরুখের সঙ্গে মাহিমাকোলাজ

ভিডিও বার্তায় ক্যানসার নির্ণয়ের ঘটনা বর্ণনা করে মহিমা বলেন, ‘আমার কোনো লক্ষণ ছিল না। প্রতিবছরই নিয়ম করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই। এবার পরীক্ষার সময় চিকিৎসক সন্দেহবশত স্তনের টিস্যুর কিছুটা অংশ বায়োপসি পরীক্ষা করতে দেন। পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। অস্ত্রোপচারের পর পুরো টিস্যুর বায়োপসি করানো হয়, তখন খুব সূক্ষ্ম একটা অংশে ক্যানসারের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে কাঁদতে শুরু করি। সঙ্গে আমার বোন ছিল। ও বারবার বলছিল, এটা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু ক্যানসার শব্দটাই এত ভয়ের, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না।’ শুরুতে ভয় পেলেও চিকিৎসা শুরুর পর আক্রান্ত অন্য নারীদের থেকে প্রেরণা খুঁজে নিয়েছেন বলেও জানান মহিমা।
বৈবাহিক জীবনটাও সুখের হয়নি মহিমার। ২০০৬ সালে ববি মুখার্জির সঙ্গে সংসার বাঁধেন মহিমা। ২০১৩ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments