Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeদেশঢাকানিন্মচাপের বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসীর

নিন্মচাপের বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসীর

সারা দেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালের বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসী। অফিসগামী সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। তবে আগামীকাল থেকে বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রবিবার সকালে দেখা গেছে, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বড় রাস্তাগুলোতে পানি না উঠলেও অনেক এলাকার অলিগলিতে পানি জমে গেছে। বৃষ্টির কারণে কাদাপানিতে সয়লাব সবদিক। ভোরের বৃষ্টিতে অনেক শিক্ষার্থী আজ স্কুলে যেতে পারেনি।

আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী তাসনুভা হাবিব বলেন, ‘ভোরে উঠে দেখি বৃষ্টি পড়ছে। এরপর স্কুলের জন্য তৈর হয়ে নেমে কোনও রিকশা পাচ্ছিলাম না। দেরি হয়ে যাওয়ায় আর স্কুলেও যেতে পারিনি। খোঁজ নিয়ে জানলাম, আমার অনেক সহপাঠীই আজ স্কুলে যেতে পারেনি।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আহমেদ নিজাম। তিনি বলেন, ‘আজ ভিজে ভিজেই অফিসে এলাম, উপায় কী! প্রথমে রিকশা পাই না। পরে পেলেও ভাড়া অনেক বেশি। বাধ্য হয়ে সেভাবেই অফিসে এলাম।’

এই অবস্থা শুধু স্কুল বা বেসরকারি অফিসগামীদের না। সরকারি অফিস, কলেজের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিও একই। তবে তাদের চেয়েও বেশি ভোগান্তিতে আছেন রাস্তার পাশে রাত কাটানো মানুষগুলো। পলিথিনের ভেতরে নিজেকে গুঁটিয়ে রাত কাটিয়েছেন অনেকে। রিকশাচালকদের ভোগান্তিও ছিল সীমাহীন। 

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশে মেঘমালা থাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। আগামীকাল পর্যন্ত বৃষ্টি থাকতে পারে। এরপর কমে আসবে। নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র বন্দর ও নদী বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে আগের মতোই সমুদ্র বন্দরে ৩ এবং নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’ পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধ্বসের শঙ্কার কথাও জানান তিনি।

গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে) ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৩২ মিলিমিটার। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালিতে ২২৩ মিলিমিটার। এছাড়া গোপালগঞ্জে ১৩৩, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১৮৯, বরিশালে ১৭৭, ভোলায় ১৩৪, বাগেরহাটের মোংলায় ৯৮, সাতক্ষীরা ও সীতাকুন্ডে ৯৪ এবং কক্সবাজারে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চল এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যশোর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় আছে।

রবিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, যশোর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত স্থল গভীর নিম্নচাপটি সামান্য পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়।

আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে বলা হয়েছে, স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments