বাংলার প্রতিচ্ছবি । ১৮ আগষ্ট ২০২৪ !! ০১:৩০
আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও পদত্যাগ না করায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনসহ তার অনুসারীদের পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন ঘোষণা করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ উপাচার্যের অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই দিন একই দাবিতে যবিপ্রবিতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শেখ হাসিনার ম্যুরাল, একাডেমিক ভবনের বঙ্গবন্ধুর নাম ও বঙ্গবন্ধু একাডেমিকের গ্যালারির সামনে ছবি, ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন তারা। পরদিন বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে যবিপ্রবি উপাচার্যকে শনিবারের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল (মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন) শুরু করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশ থেকে মিছিলসহকারে ভিসির বাসভবন ও প্রশাসনিক কার্যালয়ে তালা দেন তারা। একইসঙ্গে উপাচার্যসহ, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ উপাচার্যের সব অনুসারীর পদত্যাগের জোর দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি আনোয়ার হোসেন স্বৈরাচারী কায়দায় এই বিশ্ববিদ্যালয় চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনও কাজ নেই যাতে তিনি অনিয়ম দুর্নীতি করেননি। এই দুর্নীতি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একটি চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে যারা প্রতিবাদ করেছে, সেই শিক্ষক, কর্মচারী শিক্ষার্থীদের তিনি গোয়েন্দা সংস্থার লোক, পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও নাজেহাল করেছেন। তাই গত দুদিন আগে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তারপরও তিনি পদত্যাগ না করায় আজ তালা এবং শাটডাউন ঘোষণা করেছি।
শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, একটাই দাবি, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের মদতপুষ্ট দালাল ভিসি আমরা চাই না। কারণ উনি কখনও শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য ছিলেন না। উপাচার্যসহ সব দালাল সিন্ডিকেটকে বলতে চাই, আপনারা সসম্মানে পদত্যাগ করুন।
শিক্ষার্থী ফরিদ হাসান বলেন, এই ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী যারা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন, তাদেরও পদত্যাগের দাবি জানাই। শিক্ষার্থীদের পূর্ণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়, তাই এই ক্যাম্পাসে কোনও ধরনের রাজনীতি চাই না।
শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদ বলেন, পদত্যাগের বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদেরকেও ছেড়ে দেবো না, যারা ডিনস কমিটিতে বসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকরা আধিপত্য দেখান- আজ শিক্ষার্থীরা রাজপথে তাদেরকে আধিপত্য দেখাবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারও বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির খোঁজ পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেবে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এই বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এই মুহূর্তে পদত্যাগের বিষয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই। কারণ আমি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক। ভর্তি প্রক্রিয়ার ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি ৩ শতাংশ শেষ করতে পারলে দায়মুক্ত।
তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান।