বাংলার প্রতিচ্ছবি । ১৬ আগষ্ট ২০২৪ !! ১৯:১০
বগুড়া সদর থানা থেকে লুট হওয়া ৩৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত ১১টি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো পুড়ে যাওয়ায় কোনও কাজে আসবে না। অন্য অস্ত্রগুলো উদ্ধার না হওয়ায় সেগুলো অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। বিকালে বিজয় মিছিলের সময় সদর থানা, সদর ভূমি অফিস, সদর উপজেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালানো হয়। দুর্বৃত্তরা শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে সদর থানায় হামলা চালায়। সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ সদস্যরা গুলি করতে করতে থানা ছেড়ে চলে যান।
পরে আন্দোলনকারীরা সদর থানায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা থানা থেকে ৩৮টি রাইফেল, শটগান, চায়না রাইফেল, এসএমজি ও এলএমজি লুট করে। থানা থেকে মামলার আলামত হিসেবে রাখা বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল লুট করা হয়। আসবাবপত্রও বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। থানার ভেতরে ও বাইরে থাকা কমপক্ষে ১০টি যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
থানার সামনে অফিসার্স কোয়ার্টারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। উত্তর পাশে থানা মার্কেটের পাঁচটি দোকান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। থানা চত্বরে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরদিন বিকাল পর্যন্ত দ্বিতল থানা ভবন জ্বলতে থাকে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অস্ত্রাগারে ৩৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল সংখ্যক গুলি ছিল। অস্ত্রগুলোর মধ্যে শটগান ও চায়না এসএমজির সংখ্যাই বেশি ছিল। মজুত গুলিগুলো আগুনে বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে থানার ছাদ ও দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে যদি কোনোটা ব্যবহারযোগ্য হয় সেটা সবার জন্য ঝুঁকির কারণ হবে।
বগুড়া সদর থানার এসআই রহিম উদ্দিন জানান, লুট হওয়া ৩৮ অস্ত্রের মধ্যে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ১১টি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে শহরের চেলোপাড়া থেকে পাঁচটি, সাতমাথা থেকে একটি, সেনাবাহিনী উদ্ধার করেছে দুটি এবং অবশিষ্ট তিনটি থানার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ছিল। উদ্ধার হওয়া রাইফেল, শটগান, চায়না রাইফেল, এসএমজি ও এলএমজিগুলো পুড়ে গেছে। এসব ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, লুট হওয়া বাকি অস্ত্র উদ্ধারে কাজ চলছে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে অবশিষ্ট ২৭টি অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।