Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeদেশচট্টগ্রামছাত্রলীগের ১৫ কর্মীকে ছয়তলা থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

ছাত্রলীগের ১৫ কর্মীকে ছয়তলা থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

কোটা সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় একটি ছয়তলা ভবন থেকে ছাত্রলীগের অন্তত ১৫ জন কর্মীকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে তারা সবাই গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন বিকাল ৫টার দিকে মুরাদপুরের একটি ছয়তলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নেওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের বেপরোয়া মারধরে প্রাণ বাঁচানোর পথ খুঁজে না পেয়ে ছয়তলার ছাদে আশ্রয় নেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সেখানে গিয়েও তাদের মারধর করা হয়। এ সময় কয়েকজন কর্মী ছাদ থেকে ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে থামতে গেলেও পেটানো হয়। এতে কয়েকজন নিচে পড়ে যান। আরও কয়েকজনকে ছয়তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ষোলশহর স্টেশন থেকে মিছিল নিয়ে মুরাদপুরে আসেন। তখন মুরাদপুরে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিলেন। সেখানে গেলেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়ে। একপক্ষ আরেকপক্ষের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ সুযোগে তাদের ওপর চড়াও হন আন্দোলনকারীরা। যে যেদিকে পেরেছেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যান।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় ছাত্রলীগের অন্তত ২০ নেতাকর্মী মুরাদপুর মোড়ের মীর মঞ্জিল নামে একটি ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। তারা সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। আন্দোলনকারীরাও নিচ থেকে তাদের পাথর ছুড়ে মারেন। একপর্যায়ে ভবনের ছাদে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে থাকা পাথর শেষ হয়ে যায়। ততক্ষণে মুরাদপুর মোড় আন্দোলনকারীদের দখলে চলে আসে। এরই মধ্যে আন্দোলনকারীরা ভবনটির ছাদে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লাঠিসোঁটা ও কাঠ দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। তাদের সঙ্গে না পেরে প্রাণে বাঁচতে ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে থামতে যান কর্মীরা। ততক্ষণে অন্তত কয়েকজনকে পিটিয়ে ছাদ থেকে নিচে ফেলা দেওয়া হয়। বাকিরা নিচে নামতে গিয়ে পড়ে যান।’

নির্মমভাবে পিটিয়ে আহতের পর অন্তত ১৫ ছাত্রলীগ কর্মীকে ছয়তলা থেকে নিচে ফেলে দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা, এমনটি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনি।

তিনি বলেন, ‘আমি শুরু থেকে কর্মসূচিতে ছিলাম। বিনা কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ২০ জন কর্মী একটি ছয়তলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছিল। আন্দোলনকারীর ছদ্মবেশে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন তাদের নির্দয়ভাবে সাপ মারার মতো পিটিয়ে ছয়তলা থেকে ফেলে দিয়েছে। তারা সবাই নিচে পড়ে মারা গেছে মনে করে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। খবর পেয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা আমাদের ১৫ জন কর্মীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।’

আজকের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের ২৯ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন দাবি করে নুরুল আজিম বলেন, ‘আহতদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১১ জনকে বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ জন আইসিইউতে আছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে আমাদের জানিয়েছেন চিকিৎসক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুরাদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনের ছাদে কী হয়েছিল, এখনও আমরা বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখবো।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments