Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeদেশফেনীর প্রত্যন্ত এলাকায় যাচ্ছে না ত্রাণ, কষ্টে আছে মানুষ

ফেনীর প্রত্যন্ত এলাকায় যাচ্ছে না ত্রাণ, কষ্টে আছে মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বর্ষণে ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিল কয়েক লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দাগনভূঞা উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। উপজেলার বানভাসি এলাকাগুলোতে বর্তমানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ সহায়তার পরও প্রত্যন্ত এসব এলাকায় তা পৌঁছায়নি। ফলে অধিকাংশ জায়গায় ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন মানুষজন। দ্রুত ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন তারা।

উপজেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ এলাকার গ্রামীণ সব রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারা দেশ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মীরা ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া উপজেলায় প্রবেশ করলেও ত্রাণ পাচ্ছেন না দাগনভূঞার পানিবন্দি লাখো মানুষ। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন উপজেলার নারী-শিশু ও বৃদ্ধরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই উপজেলার বন্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রচারণা না থাকায় কেউ তাদের উদ্ধার করতে আসছেন না। এজন্য তারা ত্রাণ এবং কোনও ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন না।

মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার নেয়াজপুর ও সোনাপুরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের মাঝে এখনও ত্রাণ পৌঁছায়নি। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের সামান্য কিছু উদ্যোগ ছাড়া ত্রাণ পাচ্ছেন না উপজেলার পানিবন্দি অন্তত আড়াই লাখ মানুষ। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

দুর্ভোগের কথা জানিয়ে সোনাপুর গ্রামের ছালেহ আহমেদ বলেন, ‘ফুলগাজী ও পরশুরামের আগে দাগনভূঞার সব কটি গ্রাম ডুবে গিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখানের দুর্ভোগের কথা আলোচনায় আসেনি। আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে সরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। খাবারের কষ্টে আমরা হাহাকার করছি। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট।’

নেয়াজপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম ও আলী হোসেন জানান, অন্তত ১৫ দিন ধরে তাদের গ্রামগুলো পানির নিচে ডুবে আছে। গ্রামগুলো শহর থেকে অনেক ভেতরে হওয়ায় কেউ সেখানে আসছেন না। যার কারণে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। পুরো উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোর একই অবস্থা।

উপজেলার পানিবন্দি আরও কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ত্রাণ সহায়তা জেলার অন্যান্য উপজেলায় গেলেও দাগনভূঞা আসছে না। দোকানপাটে তেমন খাদ্যসামগ্রী নেই। কিছু থাকলেও অনেক বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের কাছে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা বলেন, ‘ত্রাণের সংকট আছে। অনেক মানুষকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার পানিতে ডুবে থাকায় অনেক গ্রামে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি, স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর।’

ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জেলার ছয় উপজেলায় আট লাখ ২৪ হাজার ৩৯২ জন মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৬৬ হাজার ৪৪৫ জন। যারা এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন, তাদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি আমরা।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments