Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeদেশ৪ দিন করে রিমান্ড আবু সাঈদ হত্যার দুই আসামি

৪ দিন করে রিমান্ড আবু সাঈদ হত্যার দুই আসামি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান দুই আসামি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক আসাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে রিমান্ডে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা প্রতিপালন করার আদেশ দেওয়া হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয় দুই আসামিকে। প্রথমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন আদালতে আসামি এএসআই আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে আদালত প্রত্যেকের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আল মামুন আদালতকে বলেন, ‘আসামিরা নিরস্ত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই হত্যার পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতাসহ সকলের নাম ঠিকানা জানতে তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।’

এ সময় আদালত আসামিদের আইনজীবী আছে কি না জানতে চাইলে তারা (আসামি) নেই বলে জানান। এ পর্যায়ে তাদের কোনও বক্তব্য আছে কি না জানতে চাইলে আসামি পুলিশ কনস্টেবল সুজয় চন্দ্র রায় আদালতকে জানান, তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করেছেন। সরাসরি আবু সাঈদকে গুলি করেননি। তারা আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়েছেন বলেও জানান।

অন্যদিকে আসামি এএসআই আমীর আলী আদালতে জানান, ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন ও আল ইমরান হোসেন এবং তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওই দিন ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সামনে ছিল। তারা কোটাবিরোধী আন্দোনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন। আবু সাঈদকে আমরা সরাসরি গুলি করিনি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা দায়ী নই। পুলিশের ঊর্ধ্বতন যেসব কর্মকর্তা ছিলেন আমরা শুধু তাদের আদেশ পালন করেছি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজু আহমেদের আদালতে হত্যা মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ নিরস্ত্র, একা থাকা ও পুলিশের জন্য কোনো হুমকি না হওয়া সত্ত্বেও শটগান দিয়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে গুলি করে পুলিশ। আবু সাঈদ পড়ে গিয়ে একাধিকবার দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আসামিরা পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে গুলি করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার দিন বেলা ২টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়ার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আবু সাঈদ পিছু না হটে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে যান।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments