বাংলার প্রতিচ্ছবি । ২৮আগষ্ট ২০২৪ !! ২০:৫৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উপর জামাতপন্থি শিক্ষকের নির্দেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে ঢাকার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত তেজগাঁও কলেজে। গতকাল দুপুরে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে ঐ কার্যালয়ের সামনে হামলার এই ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের দেখে নেবার হুমকি ও হামলার নেতৃত্ব দেন ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও জামাতের নেতা আ জ ম কামাল উদ্দিন। আহত তিন -চারজন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় যার নির্দেশে হামলা হয়েছে সে সহ মোট ১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
উল্লেখ্য যে, তেজগাঁও কলেজে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। বর্তমান অধ্যক্ষ কলেজে না আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দ্বারা হয়েছেন অবাঞ্ছিত। উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তাকে কিছু শিক্ষকের উস্কানিতে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ শিক্ষকদের সমঝোতার মাধ্যমে একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং দুই জন ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ নির্বাচন করা হলেও শুরু করা যাচ্ছে না ক্লাস- পরীক্ষা সহ নিয়মিত কার্যক্রম। শিক্ষকদের মধ্যে কাজ করছে উদ্বেগ- উৎকন্ঠা। বেসরকারী কলেজ হওয়ায় চলতি মাসের বেতন পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে দুঃশ্চিন্তা। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার পাশাপাশি বিরাজ করছে ক্ষোভ। অধিকাংশ শিক্ষক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থানের বিপরীতে একজন জামাতপন্থি শিক্ষকের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক অবস্থান নেওয়ায় এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিস্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
আবার তার শিক্ষাগত যোগ্যতায় বিকম(পাস কোর্স) তৃতীয় শ্রেনি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ রেজুলেশনের মাধ্যমে আর কোথাও উদাহরন হিসেবে দেখানো যাবে না মর্মে তাকে নিয়োগ দিয়েছিলো যা সম্পূর্ন বেআইনি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বর্তমান অধ্যক্ষ কলেজে আসেননি। উদ্ভূত পরিস্থিতে ছাত্র আন্দোলনকারীরা রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে একজন নিরপেক্ষ অধ্যক্ষ নিয়োগের উদ্যেগ গ্রহন করেন। সে মতে গোপনীয়ভাবে শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করে চারজনকে মনোনীত করেন। ১২ আগস্ট সকল শিক্ষক স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজিবুল্লাহ খানকে নির্বাচিত করেন। তিনি ১২৭ ভোটের মধ্যে ৭০টি ভোট পান। পরবর্তিতে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে সমঝোতার মাধ্যমে কলেজ পরিচালনার স্বার্থে আরও দুইজনকে ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয় যাতে অধিকাংশ শিক্ষকের সম্মতি রয়েছে। কিন্ত জামাতের সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে জামাতপন্থি কিছু শিক্ষক যুক্ত হয়ে কলেজে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি অন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগত দিয়ে হামলাও করিয়েছেন। অনবরত ছাত্র- শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন যার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কামাল উদ্দিন সহ ৯ জনের নামে শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এখন ঐ শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে কলেজে মানববন্ধন করেছে । তাছাড়া কামাল উদ্দিন প্রত্যক্ষভাবে জামাতের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাচ্ছেন না। আবার তার শিক্ষাগত যোগ্যতায় বিকম(পাস কোর্স) তৃতীয় শ্রেনি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ রেজুলেশনের মাধ্যমে আর কোথাও উদাহরন হিসেবে দেখানো যাবে না মর্মে তাকে নিয়োগ দিয়েছিলো যা সম্পূর্ন বেআইনি। অর্থাৎ যে শিক্ষক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী প্রভাষক হিসেবে নিয়োগের অযোগ্য তিনি কিভাবে বিকম(পাস কোর্স)তৃতীয় শ্রেনিতে পাশ করে প্রিলি মাস্টার্স করে কলেজের দায়িত্বে আসতে চান এটিও কারও বোধগম্য নয়। তার একক স্বেচ্ছাচারিতায় ও হুমকিতে কলেজের সার্বিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। সবার মাঝে বিরাজ করছে ভয়- উৎকন্ঠা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেখানে ক্যাম্পাসে হবে সবার জন্য নিরাপদ সেখানে পুরো কলেজে সৃষ্টি হয়েছে ভীতিকর পরিবেশ।