Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeপ্রধান সংবাদপোশাক শ্রমিকদের ১১ দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে

পোশাক শ্রমিকদের ১১ দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে

গার্মেন্টস শ্রমিকদের হত্যাকাণ্ডের বিচার, শ্রমিকদের ওপর দমনমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা এবং নিম্নতম মজুরিবোর্ডকে নতুন করে গঠন ও ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে পোশাক শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি। সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার এসব দাবি তুলে ধরেন।

রবিবার (১১ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পোশাক শ্রমিকের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন তিনি।

সভায় বক্তারা বলেন, বিগত সময়ে স্বৈরশাসকের নজরদারি সবচেয়ে বেশি ছিল শ্রমিকের ওপর। শ্রমিকেরা যাতে আন্দোলন না করতে পারে, সেজন্য সব আয়োজন ছিল। ২০২৩ সালে মজুরি আন্দোলনে শুধুমাত্র আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে শত শত শ্রমিক ও শ্রমিককে নেতা গ্রেফতার ও তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। তাই বাকস্বাধীনতা ও সংগঠনের অধিকারের এমন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা দরকার, যাতে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে শ্রমিকেরা কথা বলতে পারে এবং দাবি-দাওয়া নিয়ে সংগঠিত হতে পারে।

বক্তারা দ্রুত শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে করা দমনমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা সামাজিক সুরক্ষা খাতে শ্রমিকদের বরাদ্দ বাড়ানোরও আহ্বান জানান।

তারা বলেন, নতুন এই বাংলাদশে নতুন ভাষায় নতুনভাবে দেশ গড়তে হবে। প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে তাসলিমা আখতার বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ গার্মেন্টস শ্রমিক শুভ শীল ও ৬ শ্রমিকসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। ২০২৩ মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে ৪ শ্রমিক হত্যার বিচার ও শ্রমিকদের নামে করা দমনমূলক সব মিথ্যা মামলা নির্বাহী আদেশে প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি শ্রমিক স্বার্থের পক্ষের প্রকৃত প্রতিনিধি নিয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ডকে নতুন করে গঠন ও ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবির প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা করে দেশে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, পোশাক শ্রমিকসহ শ্রমজীবীদের রেশনিং দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ, শ্রমিকদের সংগঠন, ইউনিয়ন, মিছিল-মিটিং-সভা করার অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বেতন-সহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা এবং সব কারখানায় যথাযথ যৌন নিপীড়ন বিরোধী অভিযোগ সেল গঠন, কলকারখানা পরিদর্শন দফতর এবং বিজিএমইএ-সহ এই খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি বা মালিকদের উদ্যোগে গঠিত সব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এ ছাড়া গার্মেন্ট শ্রমিকদের আবাসন, তাদের স্বাস্থ্যসেবা, সন্তানদের শিক্ষার পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য ন্যায়সঙ্গত অবসরভাতা নিশ্চিতকরণ, মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপূরণের আইন প্রণয়ন, মালিকদের পাশাপাশি বায়ারদের জবাবদিহি নিশ্চিতে সরকারের উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ, হয়রানিমূলক কালো তালিকা করা বন্ধ এবং শ্রম দফতরের তদারকিতে শ্রমিকদের ডাটাবেজ হালনাগাদ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

এসময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— শ্রমিক সংহতির সহ-সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম, গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সম্পাদক রাজু আহমেদ, গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, পোশাক শ্রমিক আকলিমা আক্তার, বিআইজিডি’র গবেষক মাহীন সুলতান, বুয়েটের অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, অভিনেতা ও নাট্যকর্মী ঋতু সাত্তার ও আলোকচিত্রী আমিরুল রাজীব প্রমুখ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments