বাংলার প্রতিচ্ছবি । ০২ আগষ্ট ২০২৪ !! ১৮:২৩
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণমিছিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খুলনা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে সুমন ঘরামি নামে পুলিশের এক সদস্য (কনস্টেবল) নিহত হন। এ সময় আরও ২০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর চার পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজন মৃত ছিল। তার মরদেহ হাসপাতালের লাশঘরে রাখা হয়েছে। তার নাম সুমন ঘরামি। অপর তিন জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন মাজহারুল ইসলাম, সোহানুর রহমান সোহাগ ও সৌমেন।বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সংঘর্ষে সুমন ঘরামি নামে পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হন এবং পুলিশের ২০ সদস্য আহত হয়েছেন। সুমনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহত ২০ জনকেও পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। একজনকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ কিছু ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে আওয়াজ তুলে আন্দোলনকারীদের ভয় দেখাতে চেয়েছে। সরাসরি কারও গায়ে মারা হয়নি। কিন্তু পুলিশ সদস্য ফিরে আসার সময় আন্দোলনকারীরা একজনকে পিটিয়ে নিহত ও অন্যদের আহত করলো।’
জানা গেছে, খুলনার জিরো পয়েন্ট ও গল্লামারী মোড় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের তিন দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকল ছোড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এদিন বিকাল সোয়া ৩টায় প্রথম সংঘর্ষ হয়। পরে বিকাল ৪টায় ও ৫টা ৩৯ মিনিটে সংঘর্ষ হয়। প্রতিবাদী গান শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে শিববাড়ির দিকে রওনা হয়। এ সময় গল্লামারী মোড়ে পুলিশ বাধা দেয়। এতে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময়ে মুহুর্মুহু টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এতে পুরো গল্লামারী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এই তিন দফার সংঘর্ষে আহত হয় ১৬ জন। দুজনকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে একজন পথচারীসহ সাত জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন।
খুলনা মহানগরীর হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সঞ্জীব কুমার ঘোষ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের পর এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।