বাংলার প্রতিচ্ছবি । ২০ আগষ্ট ২০২৪ !! ২২:০১
আরজি করের ঘটনায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে চাপের মুখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে আরজি কর মামলার শুনানি হয়। শুরু থেকেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। দেহ দেখার পর কার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম এফআইআর? দেহ হস্তান্তরের তিন ঘণ্টা পর কেন এফআইআর? রাজ্যকে কড়া প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের তরফে এদিন সওয়াল করেন কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংভিসহ অন্য আইনজীবীরা।
শুনানির শুরুতে ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। সঙ্গে গোটা দেশের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেন তিনি। শুনানির শুরু থেকেই আরজি কর কাণ্ডে একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। তার মধ্যে মূলত কেন এফআইআরে এত দেরি? বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা জানতে চান, কার অভিযোগের ভিত্তিতে এবং কখন প্রথম এফআইআর দায়ের হয়েছিল?
জবাবে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম এফআইআর হয়েছিল। পরে অধ্যক্ষ অভিযোগ জানান। এর পরই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন করেন, সৎকারের জন্য মৃতদেহ কখন পরিবারকে দেওয়া হয়? এফআইআর দায়ের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেহ দিয়ে দিলেন?
রাজ্যের তরফে আইনজীবী জানান, আন্দোলনকারী চিকিৎসক পড়ুয়াদের দাবি মতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের পর দেহ বিকাল চারটার মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তখন প্রধান বিচারপতি জানতে চান, তাহলে প্রথম অভিযোগ কখন দায়ের হয়? রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, রাত ১১টা ৪৫মিনিটে প্রথম এফআইআর দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি তখন জানতে চান, কেন এত দেরিতে এফআইআর? কেন পরিবারের তরফে প্রথম এফআইআর দায়ের হলো? প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল কী করছিলেন? প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, বিকালে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় খুন। এফআইআর দায়ের হয়েছিল বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। সে সময়ে নির্যাতিতার বাবা-মা ছিলেন না, তখন হাসপাতালেরই দায়িত্ব ছিল এফআইআর দায়ের করা। কার্যত সে সময়ে চুপ থাকতে দেখা যায় রাজ্যের আইনজীবীকে।
এদিকে এদিন আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির স্বাস্থ্যভবন অভিযান ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় কলকাতায়। সল্টলেকের সিটি সেন্টারের সামনে থেকে মিছিল করে স্বাস্থ্য ভবনে যাওয়ার কথা ছিল এভিবিপির। কিন্তু সিজিও কমপ্লেক্সের কাছে আটকে দেওয়া হয়। এরপরই ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিশের সঙ্গে এভিবিপি কর্মী সমর্থকদের শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পুলিশের তরফে পরিষ্কার জানানো হয়, স্বাস্থ্য ভবনে তাদের যেতে দেওয়া হবে না। এরপরই ব্যারিকেড ভেঙে স্বাস্থ্য ভবনের দিকে রওনা দেওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলরত এক ছাত্র বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হারিয়ে গেছেন। রাজ্যের মান-সম্মান ধুলোয় মিশে গেছে।
বিক্ষোভকারীদের আটকাতে শেষমেশ লাঠিপেটা পুলিশের। টেনে হিঁচড়ে, কলার ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাদ যাননি নারীরাও। এদিন ২৫ জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এক নারী আন্দোলনকারী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশকারায় এই সব হচ্ছে। ওরা মারতে চাইছে তো মারুক। এখানেই বসে থাকব। এক সপ্তাহ পেরিয়েছে। তবুও তদন্ত হচ্ছে না।