ঢাকা | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

শরীয়তপুরে সোনালি ধানে সেজে উঠছেন মা দুর্গা

প্রকাশের তারিখ: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি : চিরাচরিত রঙের কাজ বাদ দিয়ে শরীয়তপুরে জেলোর নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া ‘শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ধাম দুর্গা মন্দিরে’ প্রতিমা বানানো হচ্ছে সোনালি ধান দিয়ে।

পূজা সামনে রেখে দিনরাত এক করে সেখানে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। খুব সূক্ষ্মভাবে প্রতিমার গায়ে ধাপে ধাপে এক একটি করে বসানো হচ্ছে সোনালি ধান।

দারুণ কারুকার্যখচিত প্রতিমা এরইমধ্যে নজর কেড়েছে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। তারা বলছেন, ধানের তৈরি এমন প্রতিমা এর আগে এখানে তৈরি হয়নি।

খুলনার পাইকগাছা থেকে আসা রাজিব সরদারের নেতৃত্বে পাঁচ জন প্রতিমা শিল্পী ঘোষপাড়া মন্দিরে কাজ করছেন।

গত চার বছর ধরে এ মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসা রাজিব বলছেন, এ বছর দুর্গা পূজায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ধান দিয়ে প্রতিমা গড়ছেন তিনি।

দেশের যে কয়েকটি জেলায় জমজমাট দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়, তার মধ্যে শরীয়তপুর অন্যতম। পূজা উপলক্ষে জেলার শতাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী মণ্ডপ আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতিমার কারুকার্যের পাশাপাশি মণ্ডপগুলো সাজানো হয় বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জায়।

মন্দির কমিটি বলছে, আট ফুট উচ্চতার এই প্রতিমাটি গড়তে ধান লাগবে প্রায় এক মণ। প্রতিমার মূল কাজ হয়েছে আরও আড়াই মাস আগে। বর্তমানে প্রতিমার গায়ে ধান বসানোর কাজ চলছে।


প্রধান প্রতিমা শিল্পী রাজিব সরদার বলেন, “মা দুর্গার কৃপায় ২৫ বছর ধরে প্রতিমা গড়ার কাজ করছি। চার বছর ধরে শরীয়তপুরের ঘোষপাড়া মন্দিরে প্রতিমা বানাচ্ছি।
“আমরা সব সময় মাটি আর রঙ তুলির আচরে প্রতিমা বানালেও এ বছর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ধান দিয়ে প্রতিমা বানাচ্ছি। যা এই অঞ্চলে এর আগে কেউ বানায়নি।”

তিনি বলেন, “কাজটি যদিও অনেক কষ্টসাধ্য, তবে এটি দেখতে খুবই দৃষ্টিনন্দন। আশা করছি, আমার গড়া প্রতিমাটি এ বছর দেশের মধ্যে সেরা প্রতিমা হবে।”

রাজিবের সহকারী প্রতিমা শিল্পী সবুজ মণ্ডল বলেন, “ধান দিয়ে প্রতিমা করার কাজ সময় সাপেক্ষ। হাতে ধান নিয়ে একটা একটা করে প্রতিমার গায়ে বসাতে হয়। কোনোভাবে ধানটি নড়ে গেলে সেটিকে আবার ঠিক করে বসাতে হয়।

“আমরা দিনরাত এক করে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই প্রতিমাটিতে ধান বসানোর কাজ শেষ করতে পারবো।”

ধান দিয়ে প্রতিমা বানানো হচ্ছে খবর পেয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে দেখতে এসেছেন ভোজেশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা অনন্ত ঘোষ।

তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবছর বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা গড়ার কাজ দেখি। এবার ঘোষবাড়ি মন্দিরে এসে দেখতে পেলাম ধানের প্রতিমা বানানো হচ্ছে। ভীষণ ভালো লাগছে দেখে। ধানের তৈরি এমন প্রতিমা এর আগে এখানে দেখিনি।”

রাধাগোবিন্দ ধাম দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি গোপাল ঘোষ বলেন, “আমরা সবসময় আমাদের মন্দিরে ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করি। এ বছর ধানের প্রতিমা নির্মাণ করা হচ্ছে, যা এর আগে ফরিদপুর অঞ্চলে বানানো হয়নি।

“আমরা আশা করছি, এ বছর ধানের প্রতিমা দেখতে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম ঘটবে।”

আগামী ২৮ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শরীয়তপুরে এ বছর ১০১টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

কমেন্ট বক্স