প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি : প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ শিক্ষার্থী।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় প্রক্টর অফিসের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন ওই ৯ শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের অনশন চলছে।
অনশনে বসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার বলেন, ‘অনশনের ২৩ ঘণ্টা হলো। আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের কোনো যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু প্রশাসন মিডিয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে ‘বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার’ অভিযোগ দিয়েছেন। আরও বলেছেন ৭ দফা দাবির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সমর্থন নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই ধীরে ধীরে অসুস্থ হচ্ছে। মানসিকভাবে সবাই ফিট, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আছি। দাবি আদায়ের আগে এখান থেকে উঠবো না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫-৬ ঘণ্টা গণস্বাক্ষরের জন্য যোগাযোগ করে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ৭ দফা দাবিতে সংহতি জানিয়েছেন। তারপরও প্রশাসন কীভাবে বলে এটা গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর চাওয়া।’
অনশনকারী আরেক শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আহমেদ মুগ্ধ বলেন, ‘অন্য নানান টিমের ক্ষেত্রে এই প্রশাসন হয়তো অনশনের ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে দুবার আসতো। কিন্তু আমরা হলফ করেই জানি আগামী ১০ ঘণ্টার মধ্যেও আমরা এই প্রশাসনের কোনো খোঁজ পাবো না। তবু আমরা লড়ছি, লড়বো।’
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ৭ দফা মেনে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে সোমবারের (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওই সময় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেয়া হয়। প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করায় বুধবার দুপুরে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ- এর ব্যানারে প্রক্টর অফিসের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৯ শিক্ষার্থী।
গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন তারা। পরপর মশাল মিছিল, প্রক্টর অফিসে লাল রঙ নিক্ষেপ করে প্রতিবাদ কর্মসূচি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয়দের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিত্র প্রদর্শনী, গণস্বাক্ষর কর্মসূচিসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’।
তাদের ৭ দফা দাবিসমূহ হলো:
১। আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান।
২। নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৩। উদ্ভুত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সবধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা।
৫। বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা।
৬। সিন্ডিকেটকর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।
৭। উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা।