Monday, November 11, 2024
Google search engine
বাড়িপ্রধান সংবাদ‘আত্মরক্ষার’ জন্য নিজের কাছে ককটেল রাখতেন ছাত্রদল নেতা

‘আত্মরক্ষার’ জন্য নিজের কাছে ককটেল রাখতেন ছাত্রদল নেতা

বাংলার প্রতিচ্ছবি । বুধবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩ । আপডেট ১১:৫১

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় হাতিরপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতারের পর চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির মতিঝিল জোনাল টিম।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, আবুল হাচান চৌধুরীর দেওয়া তথ্যমতে হাতিরপুল এলাকার একটি সেলুন থেকে একটি বিদেশি অস্ত্র ও তিনটি তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। তিনি কীভাবে এবং কেন অস্ত্র ও ককটেল সংগ্রহ করেছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির মতিঝিল জোনাল টিমের সদস্যরা জানতে পারেন আবুল হাচান চৌধুরীর কাছে অস্ত্র ও ককটেল রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করে গোয়েন্দা মতিঝিল জোনাল টিমের একটি দল। কিন্তু তাৎক্ষণিক তার কাছে কোনও অস্ত্র বা ককটেল ছিল না। আবুল হাচানকে একটি সিএনজিযোগে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার সময় তিনি কৌশলে নিজের মোবাইল ফোনটি সিএনজিতে ফেলে দেন। ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইলটি কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, পথে পকেট থেকে পড়ে গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অস্ত্র ও ককটেলের কথাও অস্বীকার করেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, আবুল হাচান কৌশলে তার মোবাইল সিএনজিতে ফেলে এলেও সেটি খোলা ছিল। তার মোবাইল নম্বরে কল করলে সিএনজি চালক তা রিসিভ করেন। তিনি ফোনটি ডিবি কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়ে যান। মোবাইল ফোন ঘেঁটে গত ৩ আগস্ট তোলা অস্ত্রের একটি ছবি পায় ডিবি। ওই ছবির উৎস জানার পর অস্ত্র ও ককটেলের কথা স্বীকার করেন আবুল হাচান। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি বিদেশি অস্ত্র ও তিনটি তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়।

আবুল হাচান চৌধুরী জানান, তিনি বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের আমল থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। সে সময় তিনি তিতুমীর কলেজে পড়াশোনা করতেন। ওই কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণে মাঝেমধ্যে নিজের কাছে অস্ত্র রাখার কথাও স্বীকার করেন।

আবুল হাচান চৌধুরীর ভাষ্য, তার কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রটি ছাত্রদলের আরেক নেতা জিসানের। জিসান তার কাছে অস্ত্রটি রাখতে দিয়েছিল। তিনি মাঝেমধ্যে তা অমিত নামে এক ছোট ভাইয়ের কাছে রাখতেন। কখনও নিজের বাসায় বা ওই সেলুনে রেখে দিতেন। সম্প্রতি তিনি মিরপুরের এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে তিনটি ককটেল কিনেছেন। নিজের নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার জন্য ককটেলগুলো বিএনপির মিছিল বা সমাবেশের সময় সঙ্গে রাখতেন।

হাচান আরও জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান মাঝেমধ্যেই হাতিরপুল এলাকায় এসে তার সঙ্গে আড্ডা দিতেন। ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ অনেক নেতাও হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজার পেছনে ও নাহার প্লাজার ১৪ তলার একটি রেস্টুরেন্টে আড্ডা ও মিটিং করতেন। মাস ছয়েক আগে জিসান নিজে মেস বাসায় থাকে বলে অস্ত্রটি তার কাছে রাখতে দেন। সম্প্রতি জিসান ও তার পাঁচ সহযোগীকে গোয়েন্দা পুলিশের পৃথক একটি দল তিনটি অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, আবুল হাচান চৌধুরী যার কাছ থেকে ককটেল কিনেছিলেন, তাকে তারা শনাক্ত করেছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

জানা গেছে, আবুল হাচান চৌধুরীর বাবার নাম হারুনুর রশীদ চৌধুরী। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন এলাকায়। রাজধানীর ধানমন্ডি ১৫ নম্বর এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তিনি। আগে হাতিরপুল এলাকায় বসবাসের কারণে এই এলাকায় নিয়মিত আড্ডা দেন তিনি।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments