বাংলার প্রতিচ্ছবি । ০৮ নভেম্বর ২০২৪ !! ০৮:০৮
দেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একদিনে রেকর্ড পরিমাণ আলু আমদানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার একদিনে ৭১ ট্রাকে এক হাজার ৮১৮ টন আলু আমদানি হয়েছে। এটি বন্দর দিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ আমদানি। এতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়ায় কেজিতে দাম কমেছে চার টাকা। দাম কমায় খুশি বন্দরে আলু কিনতে আসা পাইকাররা।
দেশীয় আলুর সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশে হঠাৎ করেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠে আলুর দাম। দাম সহনীয় পর্যায়ে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয় সরকার। গত ৫ সেপ্টেম্বর ২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরও পড়তা না থাকায় সে সময়ে আমদানি শুরু হয়নি। সম্প্রতি দেশে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং পড়তা পড়ায় গত সপ্তাহ থেকে আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিকে দুই থেকে তিন ট্রাক আমদানি হলেও পরে তা বেড়ে ১০ থেকে ২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। বন্দর দিয়ে ডায়মন্ড ও কাটিনাল এই দুই ধরনের আলু আমদানি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বন্দর দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক ৭১টি ট্রাকে এক হাজার ৮১৮ টন আমদানি হয়েছে। এতে দাম কমেছে। একদিন আগেও বন্দরে প্রকারভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, যা বর্তমানে কমে ৫১ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরে আলু কিনতে আসা আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে যখন ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হলো, সে সময় বিক্রি হলো ৪৮ টাকা। কয়েকদিন এমন থাকার পর দাম বাড়তে শুরু করে। ৪৮ থেকে বেড়ে ৫০, তা থেকে ৫২ টাকা বিক্রি হতে শুরু করে। এরপর আবার বেড়ে ৫৫ টাকা থেকে ৫৭ টাকায় উঠে যায়। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুব সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। মূলত যে পরিমাণ চাহিদা ছিল সেই মোতাবেক আমদানি হচ্ছিল না। ফলে আমরা আলু কিনতেই পারছিলাম না। কিন্তু আজ বন্দর দিয়ে প্রচুর আলু আমদানি হয়েছে। এতে কেজিতে চার টাকা করে কমেছে। এ কারণে কিনতে যেমন সুবিধা হচ্ছে তেমনি মোকামগুলোতে পাঠাতে সুবিধা হচ্ছে, পুঁজি কম লাগছে।’
বন্দরের আলু আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গত সেপ্টেম্বর মাসে আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয়। কিন্তু পড়তা না থাকায় সে সময় বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি সম্ভব হয়নি। বর্তমানে দেশের বাজারে দাম বাড়তি হওয়ায় ও ভালো চাহিদা থাকায় আমদানি শুরু হয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতেই আলুর দাম বেশি। যার কারণে চাহিদা মোতাবেক আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না।’
হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারক সাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাজারে আলুর সংকট ও চাহিদা থাকায় আমদানি বেশি হচ্ছে। প্রথম দিকে বন্দর দিয়ে ২/৩ ট্রাক করে আমদানি করা হচ্ছিল, সে সময় আমাদের পড়তা ছিল ৪৬ টাকার মতো। আর আমরা বন্দরে বিক্রি করছিলাম ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা করে। এখন দেশে আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় সব আমদানিকারক ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে আমদানি বন্ধ থাকবে। সেজন্য বন্দর দিয়ে দুই দিনের আলু একদিনে প্রবেশ করেছে। এতে করে আলুর দাম কমেছে।’
হিলি স্থলশুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, ‘বন্দর দিয়ে আগের তুলনায় আলু আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। যেহেতু এটি কাঁচাপণ্য তাই যেদিনই ভারত থেকে দেশে আমদানি করা হয় ও বন্দরে প্রবেশ করে সেদিনই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার এক হাজার ৮১৮ টন আলু আমদানি হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ আমদানির রেকর্ড।’