বাংলার প্রতিচ্ছবি । ১৭ নভেম্বর ২০২৪ !! ১৮:৪৯
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সিভিল এভিয়েশনের সদর দফতরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন।
মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রীরা যে সেবা পাচ্ছে এর আগে তা কখনও ছিল না। যাত্রীদের ফ্লাইট থেকে নামা শুরু করে বের হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের সর্বোচ্চ সেবাটাই দিচ্ছি।
তিনি বলেন, পূর্বে যাত্রীদের লাগেজ হারানো, কাটা এগুলো নিয়ে অভিযোগের শেষ ছিল না। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটতো। যাত্রীরাও বিমানবন্দরে নেমে এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন। কিন্তু এখন আর সেই আতঙ্ক নেই। আমরা লাগেজ কাটা, হারানো শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছি। বেল্ট থেকে লাগেজ আসতে আগে যেমন ঘণ্টা সময় পার হতো, এখন সর্বোচ্চ ২০/২৫ মিনিট সময় লাগে। আমরা অনেকগুলো টেলিফোন বুথ করে দিয়েছি— যেগুলো থেকে যাত্রীরা তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহজেই বের হয়ে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা সম্মানিত প্রবাসীদের জন্য পৃথক লাউঞ্জ করে দিয়েছি। এখানে তাদের স্যার বলে সম্বোধন করা হচ্ছে। এ লাউঞ্জে প্রবাসীরা রেস্ট করা থেকে শুরু করে নামাজ পড়া, খাওয়া-দাওয়া, মহিলা যাত্রী ও তাদের শিশুদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে। নামমাত্র মূল্যে তারা সেখান থেকে খাবার খেতে পারছেন। একজন যাত্রী বিমান থেকে বের হয়ে যেন মনে করেন— তার নিজ বাড়িতেই পৌঁছেছেন এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তারা যেন কোনোভাবেই কষ্ট অনুভব করতে না পারেন, তার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি সিভিল এভিয়েশন সদরদফতরেও ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সন্তানদের নিয়ে সেখানে রেখে সুন্দরভাবে অফিস করতে পারছেন।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তার জন্য এভসেক, এপিবিএনসহ ২৫/৩০টি সংস্থা কাজ করে। আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের কোনও অভাব নেই। যাত্রীদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত কোনও বিষয়ের কোনও ঘাটতি নেই। প্রতিটি অফিসার থেকে সদস্য সবাই যাত্রীসেবার জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বছরে প্রায় কোটি যাত্রী বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। এর সঙ্গে তাদের আত্মীয় স্বজনও রয়েছে। সবমিলিয়ে বিমানবন্দরে আগতরা যেন সুখ স্মৃতি নিয়ে যান— তার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতি দ্রুত সময়ে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন ও ফেডারেল সিভিল অর্গানাইজেশন থেকে ইন্সপেকশনে আসবে। তারা সরেজমিন এই সব বিষয় দেখে আমাদের সখ্যমতা তারা দেখবেন। আমি মনে করি, তারা আমাদের কার্যক্রম দেখে প্রশংসাও করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে কর্মরত কোনও সংস্থার মধ্যেই কোনও ধরনের মনোমালিন্য নেই। যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ দেখার কোনও সুযোগ নেই। এখানে সমষ্টিগত বা রাষ্ট্রের স্বার্থ দেখতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে এখানে যাত্রী ও ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়বে। শাহজালাল বিমানবন্দর হাবে পরিণত হবে। সেখানেও যাত্রীদের যেন উন্নত সেবা পেতে কোনও ধরনের সমস্যা হবে না। আমরা সেভাবে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞ লোকবল নিয়োগ করবো। সর্বোপরি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ আমরা সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
আমরা মনে করি, ২০৩৫ সাল অর্থাৎ এখন থেকে ১০ বছর পর আমরা এই বিমানবন্দরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারবো না। আমাদের পৃথক আরেকটি বিমানবন্দর প্রয়োজন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আমাদের যে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে, সেই নতুন বাংলাদেশকে আমরা আরও উন্নত, সমৃদ্ধ করতে এগিয়ে যেতে চাই।