বাংলার প্রতিচ্ছবি । ৩০ অক্টোবর ২০২৪ !! ২০:৫০
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কাদের বৈঠক হয়।
হাইকমিশনার প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কাজ এবং ঢাকায় সফরকালীন সরকারের উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান, সংস্কার কমিশনের প্রধান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করেন।
এ ছাড়া ভলকার টুর্ক গত জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কাজ চলমান আছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যা বিপ্লবের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করছে, তার কাজ নিয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিশন নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
স্বৈরাচারী সরকারের সময় ঘটে যাওয়া জোর করে গুমের বহু ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান ভলকার টুর্ক।
তিনি বলেন, এমন অনেক কিছু আছে, যা ঠিক করা দরকার। গুমের ঘটনা তদন্তে তার অফিস তদন্ত কমিশনকে সহায়তা করছে বলে জানান তিনি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ‘স্বাধীন’ ও ‘সম্পূর্ণ কার্যকরী’ করে শক্তিশালী করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর ঢাকায় তাদের উপস্থিতি জোরদার করতে চায়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারকে বাংলাদেশ সফর করার জন্য এবং বিপ্লবের সময় তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আপনার সফরে খুশি। তারা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উন্নয়ন ও মানবাধিকার যেন একসঙ্গে চলতে পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকার আগের সরকারের ভুল ও অপরাধের ‘পুনরাবৃত্তি’ করবে না বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ও প্রধান উপদেষ্টা এ সময় রোহিঙ্গা সংকট, বিশেষ করে মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার নতুন রোহিঙ্গার আগমন নিয়েও আলোচনা করেছেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সংকট সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন ভলকার টুর্ক।
প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরি করতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন, যাতে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকেরা তাদের নিজ অঞ্চলের কাছাকাছি থাকতে পারে।
তারা দুজনই এই আঞ্চলিক সমস্যাটির দ্রুততম টেকসই সমাধানের জন্য ‘কিছু গতিশীল উদ্যোগ’ নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা জানান এবং আসিয়ানের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানান।