বাংলার প্রতিচ্ছবি । ১৬ অক্টোবর ২০২৪ !! ১৭:৩৯
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘অদক্ষতা ও অনাচারে মানুষ অতিষ্ঠ’ দাবি করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বলেছে, ‘মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে-আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা।’
বুধবার (১৬ অক্টোবর) ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে দলটির দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাবিরোধী কাজ করে আসছে। সুপরিকল্পিতভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের শত্রুজ্ঞান করছে। জাতীয় রাজনীতি থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করছে, মিথ্যা মামলায় গণগ্রেফতার চালাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে, যাকে মাৎস্যন্যায় বলা চলে। সরকারের অদক্ষতা ও অনাচারে অতিষ্ঠ মানুষ ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে হয়েছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহকর্মীরা, দেশের মুক্তিকামী জনতা ও তাঁর পরিবারের অবদান অমোছনীয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হচ্ছে মুক্তির লড়াইয়ের সব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রতীকী স্থাপনাগুলো। এসবের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত জাতীয় দিবসগুলো রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে জানানো হয়—ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিল হচ্ছে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে প্রতিহিংসামূলক দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের জাতীয় ইতিহাস থেকে এসব দিবসের তাৎপর্য কোনও বিবেচনাতেই অস্বীকার করা যাবে না। রিসেট বাটন চেপে কেউ আমাদের ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’। আমাদের প্রত্যাশা হিংসা ও বিদ্বেষের বিপরীতে সবার যাবতীয় ও জাতীয় ভুলগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাক, আমাদের অন্যায়গুলো বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াক এবং সব অপশক্তি বিনাশের জন্য আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হোক ‘সত্য বল সুপথে চল’।’
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের বিদ্বেষে বাতিল হতে যাওয়া দিবসগুলো বাঙালি বরাবরের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পরম মমতায় পালন করে দৃঢ়ভাবে বলে উঠবে, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে’।
রিসেট বাটন চেপে বাঙালির জাতীয় ইতিহাস মুছে ফেলার মাধ্যমে বিভেদ ও প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির রাজনীতিকে পরিপুষ্ট করতে চাওয়ার অভিপ্রায় বাঙালি জাতি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির দাবি, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সমগ্র জাতি ও মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে হীন পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দেবে।’