বাংলার প্রতিচ্ছবি । ০৮ নভেম্বর ২০২৪ !! ০৮:৪৫
এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও বেসরকারি স্কুল-কলেজের বেতন/টিউশন ফি ছাড়া অন্য সব ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। চার ক্যাটাগরিতে এই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো মাধ্যমিক (এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান), মাধ্যমিক (নন-এমপিও), কলেজ (এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান) ও কলেজ (নন-এমপিও)।
মহানগরের স্কুলের বেতন/টিউশন ফি নির্ধারণ করবে মহানগর কমিটি এবং জেলা সদর, পৌর এলাকা ও উপজেলার স্কুলের ক্ষেত্রে তা নির্ধারণ করবে জেলা কমিটি। বেতন নির্ধারণ করে কমিটিকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি নীতিমালা ২০২৪-এ এসব ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এই নীতিমালা পরিপত্র আকারে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, নীতিমালা জারির তারিখ (২৭ অক্টোবর ২০২৪) থেকে এটি কার্যকর হবে।
নীতিমালায় বেতন ও ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মহানগর; জেলা সদর, পৌরসভা ও উপজেলা সদর এবং মফস্সল শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
মহানগর জেলা উপজেলা মফস্সলের স্কুলের ফি নির্ধারণ
নীতিমালায় বলা হয়েছে, মহানগরের (সিটি করপোরেশন এলাকা) এমপিওভুক্ত স্কুল ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বেতন/টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ২৩ খাতে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরে ২ হাজার ৪৬৫ টাকা আদায় করতে পারবে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা খাতে প্রতি পত্রের জন্য ৪০ টাকা, টিফিন বাবদ মাসে ১৫০, মুদ্রণ বছরে ২০০, ম্যাগাজিন ৭৫, ক্রীড়া ১৫০, সাংস্কৃতিক উৎসব ৭৫, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্যাপন ৭৫, বিভিন্ন ক্লাব গঠন ২৫, লাইব্রেরি ২০, কল্যাণ/দরিদ্র তহবিল ২৫, আইসিটি ২৪০ (মাসে ২০ টাকা), বাগান ৬০, ল্যাবরেটরি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ৪০, কমনরুম ৩০, পরিচয়পত্র ৫০, নবীনবরণ-বিদায় সংবর্ধনা ৫০, চিকিৎসা ১০, বিবিধ ৫০, উন্নয়ন ১০০০, বিদ্যুৎ ৩০, শিক্ষাসফর ৫০, সাঁতার প্রশিক্ষণ ফি ১০ টাকা।
জেলা সদর, পৌর এলাকা ও উপজেলা সদরের এমপিওভুক্ত স্কুলের ক্ষেত্রে কয়েকটি ক্ষেত্রে ফি কিছু কমেছে। এই শ্রেণির বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে বেতন ছাড়া অন্যান্য ফি বাবদ দিতে হবে ১ হাজার ৮৫০ টাকা। মফস্সলের স্কুলের ক্ষেত্রে তা হবে ১ হাজার ৪০৫ টাকা।
মহানগর এলাকার নন-এমপিও স্কুলের ক্ষেত্রে বেতন ছাড়া একজন শিক্ষার্থীকে অন্যান্য খাত মিলিয়ে বছরে মোট দিতে হবে ৪ হাজার ২৫ টাকা। জেলা সদর, পৌর ও উপজেলা সদরের নন-এমপিও স্কুলের ক্ষেত্রে এই খরচ ২ হাজার ৭০৫ টাকা। মফস্সলের নন-এমপিও স্কুলের ক্ষেত্রে এসব খাতে শিক্ষার্থীকে দিতে হবে ১ হাজার ৮৬০ টাকা।
মহানগর এলাকার এমপিওভুক্ত কলেজ বেতন/টিউশন ফি ছাড়া বছরে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৬টি খাতে নিতে পারবে মোট ৩ হাজার ৬৬০ টাকা। জেলা সদর, পৌর ও উপজেলা সদরের এমপিওভুক্ত কলেজ বেতন ছাড়া ২৬ খাতে নিতে পারবে মোট ২ হাজার ৫৭৫ টাকা। আর মফস্সলের এমপিওভুক্ত কলেজ নিতে পারবে ১ হাজার ৬৪৫ টাকা।
মহানগরের নন-এমপিও কলেজ বেতন ছাড়া বছরে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৬ খাতে নিতে পারবে মোট ৪ হাজার ৩৩০ টাকা। জেলা সদর, পৌর ও উপজেলা সদরের নন-এমপিও কলেজ বেতন ছাড়া নিতে পারবে মোট ২ হাজার ৯৯৫ টাকা। মফস্সলের নন-এমপিও কলেজ বেতন ছাড়া ২৬ খাতে নিতে পারবে মোট ১ হাজার ৯৯০ টাকা।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, টিউশন ফি নির্ধারণে মহানগর ও জেলা কমিটি করতে হবে। ১০ সদস্যের মহানগর কমিটিতে সভাপতি থাকবেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষা ও আইসিটি/সার্বিক, সদস্যসচিব থাকবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপপরিচালক। সাত সদস্যের জেলা সদর, পৌর ও উপজেলার কমিটিতে সভাপতি থাকবেন জেলা প্রশাসক, সদস্যসচিব হবেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রতিবছর অক্টোবরের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিনিধি নির্বাচন করে কমিটির সভাপতিকে অবহিত করবেন। প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। বেতন এবং বিভিন্ন খাতে আদায় করা অর্থ তফসিলি ব্যাংকের নির্দিষ্ট হিসাবে রাখতে হবে। আদায় করা অর্থ অবশ্যই খাতভিত্তিক খরচ করতে হবে এবং এক খাতের অর্থ অন্য খাতে খরচ করা যাবে না।