বাংলার প্রতিচ্ছবি । ১৪ নভেম্বর ২০২৪ !! ১১:৫৭
গাজীপুরের শ্রীপুরে এইচডিএফ অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেওয়ায় একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এতে ওই সড়কে যানবাহন আটকে পড়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের জৈনাবাজার কলেজ রোড এলাকায় ওই কারখানার সামনে জৈনাবাজার-কাওরাইদ সড়কের ওপর অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকরা।
কারখানার ফিনিশিং সেকশনের অপারেটর তাসলিমা বেগম, জোছনা আক্তার, রোজিনা বেগম, নিটিং সেকশনের কোকিলা, নাসরিন আক্তার এবং সুইং সেকশনের সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রায় ৪শ শ্রমিক এই কারখানায় কাজ করি। আমাদের ন্যায্য পাওনা হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিল, ইনসেনটিভ বোনাস, উৎপাদন বোনাসসহ কোনও সুযোগ-সুবিধা কারখানা থেকে দেওয়া হয় না। প্রতি মাসে সপ্তম কর্ম দিবসে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও ১৫ তারিখের পর বেতন দেয়। সকালে আমরা কাজ করতে এসে দেখি গেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
‘কোনও নোটিশ না দিয়ে কর্তৃপক্ষ অক্টোবর এবং চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমাদের দোকান বাকি, বাড়ি ভাড়া বাকি, ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষার বেতন দিতে হবে। দেড় মাসের বেতন না দিয়ে কারখানা হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা দোকানের বাকি এবং বাসাভাড়া দিতে পারছি না।’
এইচডিএফ অ্যাপারেলস লিমিটেডের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক (এডমিন ম্যানেজার) সিপু চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের এক মাসের বেতন বকেয়া আছে। প্রায় চার মাস ধরে কারখানায় কোনও কাজের অর্ডার নেই। আমরা সাব কন্ট্রাক্টে অর্ডার এনে কাজ করাচ্ছিলাম। আমরা শ্রমিকদের বলেছি, আগামী ১৮ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। তারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অযৌক্তিক দাবি তুলে কারখানার সব কাজ বন্ধ করেছেন। কাজে যোগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করলেও তারা নিজ নিজ কাজ বন্ধ রাখেন এবং উশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করেন। যা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ মোতাবেক অবৈধ ধর্মঘটের শামিল।
‘শ্রমিকরা বসে থাকায় কারখানার জেনারেটর বিল, বিদ্যুৎ বিল এবং ডিজেল খরচ হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে হেড অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে বুধবার রাতে সাব কন্ট্রাক্টের মালগুলো ফেরত দিয়ে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টানিয়ে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বতর্মানে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিক ও প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তায় বাধা সৃষ্টি হওয়ায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) থেকে কারখানা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে কাজের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমাদের পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে না জেনে কিছু বলতে পারছি না।’