
বাংলার প্রতিচ্ছবি: দেশের রাজনীতিতে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বিএনপিপন্থি বিভিন্ন সংগঠন।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে ‘বাংলাদেশের মানুষের কান্ডারি ও অভিভাবক’ বর্ণনা করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনটি বলেছে, “বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী এবং দেশপ্রেমের এক অদম্য প্রতীক। বাংলাদেশ, খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
“খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে এক আলোকবর্তিকা। যিনি তার জীবদ্দশায় কখনো আপোস করেননি। কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে মাথানত করেননি।”
গত ৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো খালেদা জিয়ার চার দশকের রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় কেটেছে রাজপথের আন্দোলনে। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন; তবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কখনো তিনি হারেননি।ইউট্যাব প্রেসিডেন্ট এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব মোর্শেদ হাসান খানের পাঠানো শোকবার্তায় বলা হয়, “সংকটে-সংগ্রামে তিনি ছিলেন অবিচল। তার সাহস ও আপোসহীন মনোভাব ছিল দেশপ্রেমে বলীয়ান।
“খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জনগণের ভালোবাসা এবং অকুণ্ঠ সমর্থনে গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন তিনবার।“
ইউট্যাব বলছে, “দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতিসহ গ্রামীণ অবকাঠামোর অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলেই। বিশেষ নারী শিক্ষার প্রসার এবং উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে তার অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।“
‘এক আপোসহীন ইতিহাসের অবসান’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন।
এক শোকবার্তায় ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, “আজ শুধু একটি রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়নি, বরং বাংলাদেশ তার মমতাময়ী অভিভাবককে হারালো।
“বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে তিনি যেভাবে প্রতিকূল সময়ে দেশের হাল ধরেছিলেন, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।“
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধা পাওয়া খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।
খালেদা জিয়ার মূল্যায়নে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন বলেছে, “তিনি ছিলেন হিমালয়সম ধৈর্যের প্রতীক। কারাবরণ, অসুস্থতা আর ব্যক্তিগত শোককে তুচ্ছ করে তিনি আমৃত্যু এদেশের মানুষের অধিকারের কথা বলে গেছেন। তার মৃত্যুতে একটি আপোসহীন ইতিহাসের অবসান হলো।”