বাংলার প্রতিচ্ছবিঃ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানানো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনকে অপসারণ করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এদিন সকালে জরুরি বৈঠকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেন বলে জানানো হয়। ওই ছয় ডিনের রুটিন দায়িত্ব উপাচার্য ও তার প্রতিনিধি হিসেবে দুজন উপ-উপাচার্য পালন করবেন।

ইফতিখারুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতেই দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় বলে আমাদের সম্মানিত ছয়জন ডিন লিখিতভাবে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। উপাচার্য এটি গ্রহণ করা মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর ওপর দায়িত্ব চলে আসে। পরে উপাচার্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনিসহ দুই উপ-উপাচার্য মিলে এই দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন।”

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ সরাসরি ভাইস-চ্যান্সেলর দেখবেন। তার প্রতিনিধি হিসেবে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ব্যবসায় শিক্ষা ও আইন অনুষদের দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান ও ভূবিজ্ঞান অনুষদের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন।

আওয়ামীপন্থি যেসব ডিনদের অপসারণ করা হয়েছে তারা হলেন- আইন অনুষদের অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক এস এম একরাম উল্ল্যাহ, ভূবিজ্ঞান অনুষদের অদ্যাপক এ এইচ এম সেলিম রেজা, প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক বিমল কুমার প্রামাণিক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নাসিমা আখতার।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। তাদের মেয়াদ ছিল ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উপাচার্য ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, এসব ডিনদের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত স্ব-পদে থাকার নির্দেশ দেন।

তবে তাদের পদত্যাগের দাবিতে রাকসুর জিএস সালাউদ্দিন আম্মারসহ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। রোববার সকালে ডিনদের দপ্তরে তালা ঝুলান তারা। পরে দুপুরে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসন ভবনের সব দপ্তরের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে ডিনদের অপসারণের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলে বিকাল সাড়ে ৪টায় কার্যালয়গুলোর তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে সন্ধ্যায় ডিনদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভায় সব ডিনরা রুটিন দায়িত্ব পালনে অপরাগতা জানিয়ে পৃথকভাবে আবেদনপত্র দেন।