
প্রিন্স মন্ডল অলিফ (বাগেরহাট প্রতিনিধি) : আলো আর আশার মেলবন্ধনে মুখরিত হয়ে উঠেছিল চিতলমারীর উপজেলা অডিটোরিয়াম মিলনায়তন। "জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠন" এই শিরোনামে আয়োজিত শপথ গ্রহণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেন একটি নতুন দিনের প্রত্যয় নিয়ে হাজির হয়েছিল সকলের সামনে। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সকালে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপস পাল স্বাগত বক্তব্যে জানান, "এই জুলাই কেবল একটি মাস নয়, এটি আমাদের উপলব্ধি, প্রতিবাদ ও প্রেরণার নাম। আজকের এই শপথ, আমাদের একটি সুন্দর, ন্যায্য ও সচেতন সমাজ গড়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ।"
উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে মিলনায়তনটি হয়ে ওঠে মত, মনন আর মানুষের মিলনমেলা।
প্রধান অতিথি ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন—
• উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান
• সমাজসেবা অফিসার রঞ্জন হালদার
• সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক শেখর মজুমদার
• শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ খায়রুল
• প্রেস ক্লাব সভাপতি একরামুল হক মুন্সী
• সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও তরুণ সমাজকর্মী প্রিন্স মন্ডল অলিফ
বক্তারা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজের সমস্যা, সম্ভাবনা এবং করণীয় নিয়ে বক্তব্য দেন। তারা বলেন, উন্নয়ন শুধু অবকাঠামোয় নয়—আচরণ, মানবিকতা, দায়িত্ববোধেও।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল "সমাজ গঠনে শপথ" অনুষ্ঠান।
স্থানীয় শিক্ষার্থী, যুবক, নারী নেত্রী, শিক্ষক, কর্মজীবী নারী—সকলেই এক কণ্ঠে শপথ নেন: "আমি দেশকে ভালোবাসি। আমি সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবো। আমি নিজের দায়িত্ব বুঝে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো।"
এই শপথ পাঠ করান ইউএনও নিজে, যার প্রতিটি শব্দে ছিল প্রত্যয় আর প্রেরণা।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা — চেতনার স্পর্শ
শপথ পর্ব শেষে পরিবেশিত হয় এক অনুপ্রেরণামূলক সাংস্কৃতিক আয়োজন।
স্থানীয় স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে দেশাত্মবোধক গান, কবিতা এবং নৃত্য।
বিশেষ করে “এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা-সুরমা নদী তটে…” গানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে গোটা মিলনায়তন।
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান। বাস্তবায়নে সরাসরি অংশ নেন উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
এই আয়োজন কেবল একদিনের অনুষ্ঠান নয়—এ যেন সমাজ বদলের এক চুপচাপ সংকেত।
চিতলমারীর মানুষ দেখিয়ে দিলেন, ছোট উদ্যোগেও গড়ে উঠতে পারে বড় প্রত্যয়।