প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি : পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে জেলা আদালতের বাইরে আত্মঘাতী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সেই সঙ্গে এই হামলার জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় সহায়তায় সক্রিয় চরমপন্থি গোষ্ঠী ফিতনা আল-হিন্দুস্তান’ এই বোমা হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তান থেকে ভারতীয় প্ররোচনায় সক্রিয় খাওয়ারিজরা একই সময়ে (ওয়াজিরিস্তানের) ওয়ানায় নিরীহ শিশুদের ওপরও আক্রমণ করেছে; বিশ্বের কাছে ভারতের এই ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের নিন্দা করার সময় এসেছে। উভয় আক্রমণই এই অঞ্চলে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ।’
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার প্রত্যয় জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল না হওয়া এবং ফিতনা আল-হিন্দুস্তান এবং ফিতনা আল-খাওয়ারিজের শেষ সন্ত্রাসীকে খতম না করা পর্যন্ত আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব।’
অপরধীকে বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, যা-ই ঘটুক না কেন, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে আদালতের বাইরে পার্ক করা একটি গাড়িতে বিস্ফোরণটি ঘটে, যেখানে সাধারণত প্রচুর ভিড় থাকে। নিহতদের বেশিরভাগই পথচারী যারা আদালতে শুনানির জন্য এসেছিলেন।
পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি সাংবাদিকদের বলেছেন, হামলাকারী ‘আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়ে একটি পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।’ তবে এই হামলার জন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দোষারোপ করেননি তিনি।
হামলায় ১২ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ হামলার ‘সকল দিক খতিয়ে দেখছে’। পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা তদন্ত করছি এটি কী ধরনের বিস্ফোরণ ছিল। এটি এখনও স্পষ্ট নয়। আমাদের ফরেনসিক দলের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমরা আরও বিস্তারিত জানাতে পারব।’
হামলার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। বলেছেন, ‘পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে। এই হামলাকে ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবে নেয়া উচিৎ। এই হামলার জন্য আফগানিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করে খাজা আসিফ বলেন, ‘কাবুলের শাসকরা পাকিস্তানে সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারে, কিন্তু ইসলামাবাদে এই যুদ্ধ নিয়ে আসা কাবুলের একটি বার্তা, যার জবাব পাকিস্তান পুরোপুরি দিতে সক্ষম’।
পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এই বিস্ফোরণকে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণ’ হিসেবে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
জারদারির এক্স অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ইসলামাবাদ জেলা বিচার বিভাগীয় কমপ্লেক্সের কাছে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে (নিহতদের) শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন, আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।’