প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি : খুলনার সবজি বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও মাছ ও মুরগির বাজারে চড়া দাম ক্রেতাদের কষ্ট বাড়াচ্ছে। সরবরাহ বাড়লেও গত এক সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা। তবে সবজির বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরলেও ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম এখনও নাগালের বাইরে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) খুলনার নতুন বাজার, জোড়াকল বাজার ও গল্লামারী বাজার ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে।
সকাল ৮টার দিকে খুলনার নতুন বাজারে মাছ কিনতে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী নজরুল ইসলাম। প্রায় আধা ঘণ্টা ঘুরে তিনি ৩০০ টাকা কেজি দরে রুই মাছ কিনেছেন। তিনি বলেন, ’বাজারে সব মাছেরই দাম বাড়তি। ইলিশ কিনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। শেষ পর্যন্ত সামর্থ্যের মধ্যে রুই মাছই নিতে হলো। গত সপ্তাহে একই আকারের রুই ২৬০ টাকা কেজি দরে কিনেছি।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও মাছের দাম বাড়ছে। বাজারদর অনুযায়ী রুই মাছ আকারভেদে কেজি প্রতি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, এক কেজি বা তার চেয়ে বড় ভেটকি মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, এক কেজির কম ভেটকি মাছ ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চিংড়ির বাজারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। গত সপ্তাহে মাঝারি আকারের চিংড়ি ৬০০ টাকা কেজি থাকলেও এ সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ টাকা কেজিতে। ইলিশের দাম নতুন করে না বাড়লেও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই রয়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে, ৮০০–৯০০ গ্রামের ইলিশ ১৮০০ টাকা এবং ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে।
মাছের বাজারে এমন চড়া দামে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ’চিংড়ি মাছ আস্তে আস্তে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সপ্তাহে একদিন বাজারে এসেও মাছ কিনতে পারছি না। প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে কিনতে হচ্ছে।’
বিক্রেতাদের দাবি, সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও চাহিদার তুলনায় তা কম। জোড়াকল বাজারের মাছ বিক্রেতা আলকাস উদ্দিন বলেন, ’সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ আরও বাড়লে দাম কমতে পারে।’
এদিকে মাছের মতো মুরগির বাজারও চড়া। খুলনার বাজারে শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৮০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ২৮০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহে ছিল ২৬৫ থেকে ২৭০ টাকা।
তবে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি দেখা যাচ্ছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। ঝিঙে ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, বরবটি ৯০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।