ঢাকা | ০৬ জুন ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্বদ্য বিবাহিত নববধূকে ধর্ষণ

প্রকাশের তারিখ: জুন ৫, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
প্রিন্স মন্ডল অলিফ (বাগেরহাট প্রতিনিধি) : বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার চর কচুড়িয়া ( মেদ্ধা পাড়া ) গ্রামে গত ২৬ মে সোমবার এক সদ্য বিবাহিত নব বধুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ২৬ মে ধর্ষকের পিতাকে থানা হাজতে ধরে নিয়ে আসলে ও পরে তাকে স্থানীয় জনপ্রতি নিধিদের  উপস্থিতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  

 ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ভিকটিমের সাথে কথা বলে জানা যায় ঘটনার দিন সকালে পাপিয়ার (১৮) স্বামীকে এমরান শেখ (৩০), পিতাঃ মোখলেছ শেখ (৫৫), গ্রামঃ চর কচুড়িয়া ( মেদ্ধা পাড়া )  তার নিজস্ব ঘেরের জমিতে মাটি কাটার কাজের জন্য ঠিক করে। পাপিয়ার স্বামী পেশায় একজন দিন মজুর। এমরান শেখ পাপিয়ার স্বামীর দুর সম্পর্কের ভাতিজা, সম্পর্কে পাপিয়া এমরান শেখ এর চাচী। যথারীতি ভোর বেলা পাপিয়ার স্বামী তার ঘেরের জমিতে কাজে যায় এবং কাজে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তাকে ঘরের দরজা দিয়ে ঘুমোতে বলে। যথারীতি পাপিয়া ঘরের দরজায় খিল দিয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে শুয়ে পড়ে ও ঘুমিয়ে যায়। 

পাপিয়ার বাড়ির অবস্থান চর কচুড়িয়া (মেদ্ধা পাড়া) বলেস্বর নদীর কোন এক চর এলাকায়, শুধু মাত্র তাদের ১ টি ঘর খালের কিনারায় যার আশে পাশে আর কোন বাড়িঘর নেই। এ দিকে ধর্ষক এমরান শেখ নিজের জ্ঞাতসারে পাপিয়ার নির্জন বাড়ীতে হাজির হয় এবং এই সুযোগে ধর্ষীতার ঘরের দরজার খিল জানালার ভিতর দিয়ে লাঠিভরে খুলে ফেলে কিন্তু দড়ি দিয়ে বাধার কারনে দরজা খোলেনা, তখন ম্যাচলাইটের আগুন দিয়ে দড়ি পুড়িয়ে সে ঘরের ভিতর ঢুকে আবার ভিতর থেকে দরজা চাপিয়ে দিয়ে রাখে। 

এমরান শেখ  ঘরের ভিতর ঢুকে দেখে পাপিয়া কোম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমন্ত, তখন এমরান শেখ মশারির ভিতর তার হাত ঢুকিয়ে পাপিয়ার শরিরে হাত দেয় ও পাপিয়ার ঘুম ভেংগে যায়। পাপিয়া কিছু বুঝে উঠার আগেই এমরান শেখ পাপিয়াকে জড়িয়ে ধরে ও পাপিয়ার স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেয়। পাপিয়া এমরান শেখ এর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চেস্টা করে ব্যার্থ হয় কিন্তু অতি চালাক এমরান শেখ তখন কম্বল দিয়ে পাপিয়ার মুখ চেপে ধরে এবং তার ওড়না দিয়ে হাত মুখ ও পা বেধে ফেলে। পরবর্তীতে এমরান শেখ পাপিয়ার সাথে জোর পূর্বক শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় এবং ধর্ষন শেষে তার নিজস্ব মোবাইল ফোনে উলঙ্গ অবস্থায় পাপিয়ার ক্ষত বিক্ষত শরীরের ভিডিও ও ছবি ধারন করে রাখে, ও বলে যায় এই ঘটনা কাউকে বললে বা বাহিরে জানাজানি করলে এই ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিবে এবং তাকে ও তার স্বামিকে সারা জীবনের মত শেষ করে দিবে। 

এমরান শেখ আরও হুমকি দেয় যে, আমার টাকা আছে তোরা আমার কিছুই করতে পারবিনা, তোর স্বামী একজন দিনমজুর, তার চেয়ে বরং কিছু টাকা পয়সা নে আর আমি মাঝে মাঝে তোর কাছে আসব তোর খোজ খবর নিব, তোকে জামাকাপড় কিনে দিব ইত্যাদি। 

ধর্ষীতা পাপিয়ার এই কথায় মোন গলেনা সে তৎক্ষণাৎ তার স্বামীর কর্মস্থলে জায় ও তাকে সব ঘটনা খুলে বলে। এমতাবস্থায় তার স্বামী সোজা এমরান শেখ এর দোকানে চলে আসে ও ঘটনার বিষয়ে জানতে চায় ,তখন এমরান শেখ বলে যা করার করেছি তুই পারলে কিছু করিশ। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পাপিয়ার স্বামী ধর্ষক এমরান শেখ  এর ব্যাবহারিত মোবাইল ফোনটি চেক করতে চায় কিন্তু ধর্ষক এমরান শেখ তা দিতে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে আস্তে আস্তে সেখানে অনেক লোক জড়ো হয় এবং এর মধ্য দিয়ে ধর্ষক এমরান শেখ পালিয়ে যায়, তখন স্থানীয় মানুষের মধ্য থেকে অজ্ঞাত একজন ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনা জানান এবং তৎক্ষণাৎ সেখানে চিতলমারী থানা পুলিশ উপস্থিত হয় ও ভিকটিমকে থানায় নিয়ে আসে।

ধর্ষীতার স্বামী প্রতিদিনের বাংলার প্রতিচ্ছবি কে বলেন, স্থানীয় মেম্বার জনাব হানিফ শেখ ও স্থানীয় মুরূব্বিরা বিষয়টি নিয়ে মিট মিমাংসার দেন দরবার করছেন কিন্তু তারা এই বিষয়টি শুনতে নারাজ। 

পাপিয়া ও তার স্বামী বলেন আমরা গরিব মানুষ বলে কি আমাদের কোন বিচার হবেনা! আমরা কি এর কোন সঠিক বিচার পাবোনা! আমরা এই ধর্ষকের ফাসি চাই। 

এলাকার একাধিক গন্য মান্য ব্যাক্তি বর্গ ও যুবক ছেলে পেলে ও মহিলাদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন ঘটনা যা ঘটেছে তা সঠিক। আমরা এই ধর্ষকের ফাসি চাই। 

ধর্ষক এমরান শেখের বাবার বাড়িতে তাদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা কেউ ই এই বিষয়ে ক্যামেরার সামনে বা পিছনে কথা বলতে রাজি হয়নি। 
ধর্ষক এমরান শেখ আলাদা বাড়িতে থাকেন সেখানে গেলে ও দেখা যায় ঘর তালাবদ্ধ বাড়ীতে কেউ নেই। 

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শাহাদত এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনা শোনা মাত্রই তিনি সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছেন এবং ধর্ষীতার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য সংগে করে থানায় নিয়ে আসেন এবং পরদিন বাগেরহাট জেলা সদরে ধর্ষীতার ডাক্তারি পরিক্ষার জন্য প্রেরন করেন ও জেলা সদর হাপাতালে ধর্ষীতার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্য হয় । ধর্ষীতার পরিবার এই ব্যাপারে চিতলমারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ( সংসোধনী ২০২০ ) এর ৯(১) ধারায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেছেন। আসামি ধরার প্রক্রিয়া চলমান।

কমেন্ট বক্স