ঢাকা | ০২ জুন ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

ইন্টার মিলানকে গুঁড়িয়ে অবশেষে ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন পিএসজি

প্রকাশের তারিখ: জুন ১, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
বাংলার প্রতিচ্ছবি : অভিজ্ঞতা ছাপিয়ে তারুণ্যের জয়গান শোনা গেলো মিউনিখের অ্যালিয়েঞ্জ এরেনায়। অভিজ্ঞ ইন্টার মিলানকে নিয়ে ছেলেখেলা করলো প্যারিস সেন্ট জার্মেই। পাঁচ বছর আগে যে স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়েছিল, তা এবার রূপ নিলো বাস্তবে। লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো বড় তারকাদের নিয়ে এসেও অধরা থেকে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হলো তরুণ একটি দল নিয়ে, পিএসজি এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চ্যাম্পিয়ন। শনিবার তিনবারের ইউরোপ জয়ী ইন্টারকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবার এই শিরোপা জিতলো তারা। ইউরোপিয়ান কাপ বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এটি সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। ১৯৯৩ সালে মার্শেইর পর দ্বিতীয় ফরাসি ক্লাব হিসেবে ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হলো পিএসজি। 

বয়সের হিসাবে এদিন দুই দলের প্রথম একাদশে ছিল বিরাট তফাত। পিএসজির প্রথম একাদশের গড় বয়স ২৫ বছর ৯৬ দিন, ইন্টারের ৩০ বছর ২৪২ দিন। পার্থক্য ৫ বছর ১৪৬ দিনের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে দুই দলের শুরুর একাদশে এত বেশি পার্থক্য আগে কখনও দেখা যায়নি।

এই তরুণ দল নিয়েই ইন্টারের ওপর পুরো মাঠজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে ফ্রান্সের চ্যাম্পিয়নরা।

১২ মিনিটে পিএসজিকে এগিয়ে দেন হাকিমি। ভিতিনহার পাসে বক্সের মধ্যে থেকে দুয়ের বাড়ানো বলে ফাঁকা পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান তিনি।

প্রথম গোলে অ্যাসিস্টের পর দুয়ে করেন দ্বিতীয় গোল। ২০ মিনিটে বাঁ দিক থেকে দেম্বেলের ক্রসে ডান পায়ের শট নেন তিনি। দিমাক্রোর গায়ে লেগে ইয়ান সমারকে দিগভ্রান্ত করে জালে জড়ায় বল। ষষ্ঠ ভিন্ন খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে একটি গোল ও অ্যাসিস্টের কীর্তি গড়লেন দুয়ে, অবশ্যই সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে।

তিন মিনিট পর আকেরবির হেড গোলবারের উপর দিয়ে গিয়ে হতাশ করে ইন্টারকে।

ইন্টারের মনোবলে চিড় ধরিয়ে পিএসজি একের পর এক আক্রমণ করে গেছে। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফ্যাবিয়ান রুইজের বাঁ পায়ের শট সরাসরি সমারের হাতে জমা পড়ে।

৩৮ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ব্যাকপোস্টে লাফিয়ে হেড করেছিলেন থুরাম। বল পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৪৪ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি। দুয়ের পাসে ব্যাকপোস্ট থেকে দেম্বেলের শট ব্যর্থ হয়। পরের মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুয়ের শট বাঁ পোস্ট ঘেষে বেরিয়ে যায়।

২-০ গোলে এগিয়ে থেকে হাফটাইমে যায় পিএসজি। প্রথমার্ধে তাদের নেওয়া ১৩টি শটের পাঁচটি চিল লক্ষ্যে। আর ইন্টার কেবল দুইবার শট নিয়েছিল, একটাও পারেনি কিপারের পরীক্ষা নিতে।

বিরতির পর শুরুতেই কভারাতখেলিয়ার শট কাছের পোস্ট ঘেষে মাঠের বাইরে যায়।

৫২ মিনিটে কভারাতখেলিয়া ইন্টার ডিফেন্ডারের চাপের মুখে গোলবারের উপর দিয়ে শট নেন। কয়েক মুহূর্ত পর দেম্বেলের ডানপায়ের শট গোলবারের পাশ দিয়ে যায়।

এক ঘণ্টা পার হওয়ার কিছুক্ষণ পর তৃতীয় গোলের দেখা পায় পিএসজি। ৬৩ মিনিটে দেম্বেলের বাড়ানো বল নিয়ে ভিতিনহা দৌড়ে দুয়ের কাছে পাঠান। ঠাণ্ডা মাথায় নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এই তরুণ।

৭৩ মিনিটে দেম্বেলের পাস ধরে অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে কভারাতখেলিয়া সমারকে ফাঁকি দিয়ে জাল কাঁপান। ম্যাচ ইন্টারের নাগালের বাইরে নিয়েও গোলের ক্ষুধা কমেনি পিসেজির। ৮৭ মিনিটে বারকোলার সঙ্গে ওয়ান-টু পাসে বল টেনে নিয়ে সমারের পাশ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন বদলি নামা মায়ুলু।

তিন মিনিট পর রেফারি কোনও যোগ করা সময় না দিয়েই ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজান। আনন্দ অশ্রুতে সিক্ত হন পিএসজি কিপার জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা। ২০২০ সালে ফাইনাল খেলা একমাত্র সদস্য মারকুইনহোস হাকিমিদের জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। তরুণ দলের এই অর্জনে যেন বয়স কমে যায় কোচ লুইস এনরিকের। নাচতে নাচতে যোগ দেন বিজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে। ২০১৫ সালে বার্সায় যে কীর্তি গড়েছিলেন এনরিকে, সেই ট্রেবল এবার জিতলেন ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে। লিগ ওয়ান ও ফরাসি কাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জিতে পেপ গার্দিওলাকে ছুঁলেন তিনি। দ্বিতীয় কোচ হিসেবে ভিন্ন দুটি ক্লাবের সঙ্গে ট্রেবল জয়ের কীর্তি গড়লেন এনরিকে।
কমেন্ট বক্স