বিশেষ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারঘাট থানাধীন রেমা-কালেঙ্গা রেঞ্জের রশিদপুর বিটের হাতিমারা চা বাগানে চলছে প্রকৃতি ধ্বংসের মহোৎসব। গাছ কাটা, বাঁশ কাটা, বন্যপ্রাণী শিকার ও প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের মতো অপকর্মে জড়িত রয়েছেন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। অভিযোগ উঠেছে, বাঁশ কাটার সঙ্গে জড়িত হাতি মারা চা বাগানের পাশের বাগান শ্রী বাড়ি চা বাগানের ব্যবস্থাপক জনাব ইমরান খান।
এছাড়া, গাছ কাটার কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছেন তৎকালীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদালুর রহমান আবদাল, তার ডান হাত হিসেবে পরিচিত সুজন মিয়া এবং কুখ্যাত নজির বাহিনীর অন্যতম সদস্য লিয়াকত আলী সহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এসব অপকর্মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদের ওপর শারীরিকভাবে হামলা চালান। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই অপকর্মকারীদের কারণে আমরা বিভিন্ন ভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় উপরমহলের নেতাকর্মীদের খুশি করতে হরিণের মাংস ও জংলি মোরগ উপহার হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া, সম্প্রতি পরিবেশবাদী সংগঠন “সেইভ দা নেচার অফ বাংলাদেশ” এর কর্মী রবি কস্তা এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তার ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়। তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রবি কস্তা বলেন, “আমি নিরীহ মানুষ। এই অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমি সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয়রা জানান, বন কর্মকর্তারা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, বরং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এমনকি প্রশাসনও প্রভাবশালীদের ভয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হচ্ছে না। এলাকাবাসী এসব অপকর্ম বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে হাতিমারা চা বাগান ও এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।