ঢাকা | ০৫ Jul ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

১০ দফা নিয়ে ঢাবি ভিসির কাছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের স্মারকলিপি

প্রকাশের তারিখ: মার্চ ৪, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
বাংলার প্রতিচ্ছবি: 
১০ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সাদা দলের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশ। আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয় সংলগ্ন অফিসে এই সাক্ষাৎ করেন তারা। এসময় ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে।

দাবি উপস্থাপনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, প্রো-প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার, যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী প্রমুখ।

দাবির মধ্যে রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন, ঐতিহ্য ও স্বকীয়তার স্বার্থে ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ সমুন্নত রাখা; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অনুসরণ ও চর্চা নিশ্চিত করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের গণতান্ত্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রাখা এবং স্বায়ত্বশাসনের সাথে সাংঘর্ষিক কোন পদক্ষেপ না নেয়া; ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দীর্ঘ সংগ্রামে বিশেষভাবে জুলাই গণ- আন্দোলনের দিনগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা স্বৈরশাসনের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, স্পষ্টভাবে চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসর ব্যতিরেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করে  শিক্ষার সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ সৃষ্টিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ হতে হবে ইতিবাচক, উদ্দীপনামূলক ও বৈষম্যহীন; ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় করা সকল নিয়োগ বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা; জ্ঞান চর্চা ও বিতরণের আদর্শভূমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণ কেবলমাত্র মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করা। শিক্ষকদের আবাসন সুবিধা প্রদান, হাউস টিউটর নিয়োগ ও গবেষণা প্রকল্পে অনুদান বণ্টনসহ সকল পেশাগত সুযোগ-সুবিধা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রদানের মাধ্যমে চাকরি ক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা।




১০ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক কারণে অন্যায়ভাবে হয়রানি, নির্যাতন, চাকরিচ্যুত ও পদাবনতিসহ নানা ধরনের জুলুমের শিকার হয়েছেন। ন্যায্যতার স্বার্থে তাদেরকে ভূতাপেক্ষ সুবিধাসহ পুনর্বহাল করা এবং অন্যায়কারীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় শাস্তি নিশ্চিত করা; আবাসিক হলগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তৃত্ব নিশ্চিত করে শুধুমাত্র মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ প্রদান করা। প্রতিটি হলে ভিন্ন ভিন্ন মতের শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের মাঝে আন্ত:সম্পর্কের যে চরম অবনতি ঘটেছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য অতিদ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। শিক্ষার জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মাঝে খোলামেলা আলোচনার ব্যবস্থা করা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য স্কলারশিপের সুবিধা বৃদ্ধিসহ উচ্চ শিক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত স্কলারশিপ বণ্টনের ক্ষেত্রে সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা। 

এসব দাবি তুলে ধরে স্মারকলিপিতে বলা হয়, এসব যৌক্তিক দাবি জরুরিভিত্তিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি। শিক্ষাবান্ধব ও বৈষম্যহীন প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে প্রশাসনকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানে আমরা আন্তরিকভাবে আগ্রহী।’’

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা, রাষ্ট্র পরিচালনায় বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা প্রদান করে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন ঘটানো, শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ উন্নত-সমৃদ্ধ করা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে আরও গতিশীল ও সুদৃঢ় করা, এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষা, গবেষণা ও একাডেমিক প্রশাসনে গঠনমূলক মতামত ও সহায়তা প্রদান করাই হবে আমাদের লক্ষ্য। বর্তমান বাস্তবতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো প্রাণবন্ত ও গতিশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের ভাবনাগুলো বক্তব্য ও দাবি আকারে এই স্মারকলিপির মাধ্যমে আপনার কাছে উপস্থাপন করছি।
কমেন্ট বক্স